রাগ ঘর

1.1K 48 1
                                    

তৃষাদের বাসায় শোবার ঘর আছে দুইটা। একটা মাস্টার বেড রুম। অন্য ঘরটাতে কেবল একটা খাট পাতা। আর সেখানে আছে একটা মিউজিক সিস্টেম।
এটা কোন সাধারন ঘর না। অপু এই ঘরটার নাম দিয়েছে রাগ ঘর। ওদের দুজনের ভেতরে যেই রাগ করে তখন রাতের বেলা সে এই ঘরে এসে ঘুম দেয়। মিউজিক সিস্টেম রাখা হয়ে মৃদ্যু স্বরে গান শোনার জন্য। দুজনেরই রবীন্দ্র সংগীত পছন্দ তাই সেখানে কেবল রবি বাবুর গানের ব্যবস্থা রয়েছে।

এই ঘরে প্রায় দিনেই তৃষা এসে শুয়ে থাকে। মাঝে মাঝে অপু তো ঠিক মত বুঝতেও পারে না আসলে ঠিক কি কারনে তৃষা আজকে রাগ করেছে। মাঝে মাঝে কেবল রাগ ঘরে যাওয়া দেখেই বুঝতে পারে যে তার বউ আজকে রাগ করে আছে। তাকে সামলাতে হবে।

কিন্তু আজকে চিত্র অন্য রকম। আজকে অপু এই রাগ ঘরে এসে শুয়ে আছে। লাইট অফ করে অনেক আগেই শুয়ে পরেছে। তবে মিউজিক প্লেয়ার থেকে কোন গান বাজছে না।

অপু যে ঠিক রাগ করেছে সেটা নয়। আসলে অপুর আজ মন খারাপ। মন খারাপটা ঠিক কার উপরে সেটা অপু নিজেও জানে না। তবে ওর খুব মন খারাপ লাগছে। খুব বেশি। তৃষার সাথে বিয়ের পর ওর মন এতো খারাপ আর কোন দিন হয় নি।

আজকে বিকাল পর্যন্তও ওর মন ভাল ছিল। অফিস থেকে ফিরে এসেছিল একটু আগে আগেই। তৃষা আগের রাতেই বলেছি যে আজকে ওর বাবার ওখানে যেতে হবে। একটা ছোট পার্টি রাখা হয়েছিল। সেখানেই যেতে হবে। যদিও পার্টি অনুষ্ঠান এ যাওয়াটা ঠিক অপুর ভেতরে নেই। তবে যেখানে তৃষা বলেছে সেখানে আর অন্য কিছু বলা চলে না। যেতে হবেই, নয়তো অন্য কোন উপায় নেই।

সব ঠিক চলছিল পার্টিতে। অপু এক কোনে বসেছিল। তৃষা ওর পরিচিত মানুষের কথা বলছিল। অপুর চোখ তৃষার উপরই ছিল। ও কার সাথে কথা বলছিলো, কে ওকে দেখছে কি বলছে সেদিকেই তাকিয়ে ছিল। আসলে এসবই তৃষা আর তার পরিচিত মানুষদের নিয়ে অনুষ্ঠান। এদের কাউকেই সে ঠিক মত চিনে না। মাঝে মধ্যে কেউ কেউ ওর কাছে আসছে। দু একটা কথা বলছে। অপু টুকটাক কথা বলছে তবে ওর চোখ রয়েছে তৃষার দিকে।

এমনই একজন এসে হাজির হল। এমন জায়গাতে বসলো যাতে তৃষাকে ভাল করে দেখা যায় না। অবশ্য অপু সেদিকে আর লক্ষ্য দিল না। সামনের লোকটা অনেকটা সময় তার সাথে গল্প করলো। আরও ভাল করে বললে, লোকটাই বেশি কথা বলল আর অপু কেবল শুনেই গেল।

তৃষার গল্প - সিজন টুWhere stories live. Discover now