ইন্টারভিউ

660 26 5
                                    

আমার সব সময় ইন্টারভিউ বোর্ডে ঢুকতে কেমন কেমন ভয় ভয় করে। তবে আজকে কেন জানি ভয় লাগছে না।
এই কলেজে পরীক্ষা দিতে এসে ভয়টা অনেকটাই কেটে গেছে৷ ততোক্ষণে আমাকে তারা বেশ কিছু প্রশ্ন করেছে যার সবই মোটামুটি ভাবে উত্তর দিয়েছি৷ অন্তত আমার মতে তো সঠিক ভাবেই দিয়েছি।  একজন ম্যাডাম আমার বলল,
-আপনি দেখছি বিবাহিত৷
আমি বললাম
-ইয়েস ম্যাম।
লাইনটা বলেই আমি চুপ করে রইলাম কিছু সময়। তারপর মনে হল আরও কিছু বলার দরকার। বললাম
-আমার ওয়াইফ আপনাদের এখানকারই ছাত্রী ছিল। তার বাম বললে আপনারা চিনবেন।
আরেকজন বলল
-তাই নাকি? অনেকেই তো আছে। সবাইকে কি মনে রাখা সম্ভব?
আমি একটু হাসলাম৷ তারপর বললাম
-তাকে সম্ভব।
-কি নাম আপনার ওয়াইফের?
-তার ডাক নাম তৃষা। ফরমাল নেইম....
আমার লাইনটা শেষ করার আগে মাঝে বসে থাকা আরেকজন ম্যাডাম বলল
-আরিফা রহমান?
আমি একটু হেসে বললাম
-জি।

আমি লক্ষ্য করলাম রুমের সবাই আমার দিকে এবার নতুন করে তাকাচ্ছে। বিশেষ করে মাঝের জন। ইনি সম্ভবত প্রতিষ্ঠান প্রধান। তৃষার সাথে তার মাঝে মাঝেই কথা হয়। আমার প্রায়ই কানে আসে ওরা যখন ফোনে কথা বলে।
সেই বলল
-সত্যিই কি তুমি তৃষার হাজব্যান্ড? তুমি করে বললাম কিছু মনে কর না।
আমি হেসে বললাম
- মনে করার কিছু নেই। আর আমি মিথ্যা কেন বলবো বলুন?
মাঝের মহিলাটি আবার বলল
-তাহলে তুমিই সেই জন?
আমি সেই জন বলতে কি বুঝালো আমি ঠিক বুঝলাম না।

কিছু সময় তারা নিজেদের ভেতরই ফিসফিস করে কি বলল৷ তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার এই পদটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েদেরকে বুঝিয়ে রাখার একটা ব্যাপার। সেই সাথে ধর্য্যের ব্যাপার আছে। তবে এখন মনে হচ্ছে তুমি পারবে। তৃষার সাথে প্রায়ই কথা হয়। মাঝে সে তোমার কথাও বলেছে আমাকে। তৃষাকে যখন বুঝিয়ে শুনিয়ে সামলাতে পারছো তখন অন্য যে কাউকেই তুমি কনভিন্স কররে পারবে। তুমি সামনের সপ্তাহ থেকেই জয়েন করে ফেল।

আমি ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে বের হয়ে এলাম খুশি মনে। কথাটা ম্যাডাম ভুল বলে নাই। তৃষার মন হচ্ছে এই পৃথিবীর সব থেকে আনপ্রেডিক্টেবল জিনিস। আমি যখন সেই মনের সাথেই চমৎকার ম্যাচ আপ করে নিয়েছি তখন পৃথিবীর যে পরিস্থিতির সাথেই আমি খাপ খাইয়ে নিতে পারবো।

তৃষার গল্প - সিজন টুWhere stories live. Discover now