রাগ পানি করার ঔষধ

1K 30 2
                                    

টিউশনি থেকে বাসায় ফিরতেই দেখি আমার বাসার গেটের কাছে কাশেম দাঁড়িয়ে আছে । আমাকে আসতে দেখেই তার মুখে হাসি দেখা দিল । আমি খানিকটা বিরক্ত হলাম । যদিও আগে থেকেই ধারনা ছিল তৃষা একে পাঠাতে পারে আজকে । আমার ধারনা সত্যি হল । 

আমি ওকে না দেখার ভান করে গেট দিয়ে ঢুকতে যাবে এমন সময় সে আমার সামনে এসে দাড়ালো । হাতের ব্যাগটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, ম্যাডাম পাঠাইছে ?

আমি খানিকটা বিরক্ত হয়ে বললাম, কি এতে ?

-হালুয়া আর রুটি আছে ।

-নিয়ে যাও । 

-নিয়ে গেলে ম্যাডাম আমাকে মাইরা ফ্যালাইবো ।

-এক কাজ কর তাহলে নিজে বাসায় নিয়ে গিয়ে খেয়ে ফেলো । আমাকে যদি জিজ্ঞেস করে তাহলে বলব যে আমি খেয়েছি ।

কাশেমের মনে হল বুদ্ধিটা পছন্দ হল । তার মুখে একটা উজ্জল ভাব দেখতে পেলাম । তবে সেটা নিভে গেল সাথে সাথেই । বলল, না স্যার । এর আগেও এমন একবার করছিলেন মনে আছে ? ম্যাডাম আমাকে চাকরি থেকেই বাইর কইরা দিছিলো । 


ঘটনা আমি জানি । একমাস কাশেমকে চাকরি থেকে বের করে দিছিলো । শেষে আমার অনেক রিকোয়েস্টে আবার কাজে নিয়েছে । আমি বললাম 

-তাহলে তাকে ফোন দাও । তাকে বল যে আমি এসব নিবো না । মি কি চাই সেটা সে ভাল করেই জানে । 


দেখলাম কাশেম একটু দূরে গিয়ে ফোন করলো । কি বলল কে জানে । একটু পরে এসে আমাকে বলল, ম্যাডাম বলছে আমার সাথে যাইতে !

একবার মনে হল রাগ করে বলি যে আমি যেতে পারবো না । তাকেই আসতে হবে । তারপর মনে হল দরকার নেই । নেই মামার চেয়ে কানা মামাই ভাল । 

আমি গাড়িতে উঠে বসলাম । তৃষা খুব ভাল করেই জানে এই সব বিশেষ দিন গুলোতে আমার একা একা লাগে খুব । ঢাকা শহরে আমি প্রায় ১০/১১ বছর আছি । মানুষের সাথে ঠিক মিশতে পারি না । খুব অল্প কয়েকজন মানুষা আমার পরিচিত, আমার বন্ধু । তাই এই দিন গুলোতে আমি বলতে গেলে একাই একাই থাকি । আমার মন খারাপ লাগে । বাসায় যেতে ইচ্ছে করে কিন্তু কাজ ছেড়ে বাসাতে যাওয়ার উপায় নেই । তাই একা একা থাকতে হয় । 

তৃষার গল্প - সিজন টুWhere stories live. Discover now