ক্যানিবেল

863 27 2
                                    

বাড়িটা গেটটার সমানে এসে আমরা দুজনেই কিছু সময় অপেক্ষা করলাম । ভেতরে ঢুকবো কিনা বুঝতে পারছি না । রেস্ট হাউঝ থেকে অবশ্য ঠিক করেই এসেছিলাম যে আজকে এই বাসাতে আমরা ঢুকবোই । এখানে যে থাকে সে নিশ্চয়ই আমাদের কে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিতে পারবে না । টুকটাক কথা বলে জানার চেষ্টা করবো আসলে এই বাড়িটা সম্পর্কে যা প্রচলিত সেটা আসলে কত টুকু সত্যি । আমার অবশ্য খুব একটা ইচ্ছে নেই । মানুষ জনের সাথে আমার কথা বার্তা বলতে খুব একটা ইচ্ছে করে না । কিন্তু তৃষার যদি একবার কোন কিছু মাথায় ঢুকে যায় তাহলে সেটা কোন ভাবেই মাথা থেকে বের করতে পারে না । আর একবার যদি ঠিক করে ফেলে যে সে কাজটা করবে তাহলে সেই কাজটা সে করবেই ।

আমাদের বিয়ের পরে আমরা অনেক জায়গাতে ঘুরতে গিয়েছি কিন্তু সিলেটে এসেছি এই প্রথম । প্রথমদিন এসেই আমরা পুরোচা বাগানটা ঘুরে দেখেছি । তার পরদিনই এই বাসার খোজ পাই । বাসাটা বেশ পুরাতন । তৃষাদের চা বাগানের সীমানার একেবারে শেষ মাথায় একটা ছোট টিলার মত আছে । সেটার পরে কিছু গাছগাছালি । তার ভেতরে দিয়ে একটা রাস্তা এগিয়ে গেছে । সেই রাস্তার শেষ মাথায় এই বাড়িটা । বাড়িটা দুর থেকে দেখলে একটু ভুতুরেই মনে হয় । সেদিন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল বলে আমরা ভেতরে ঢুকি নি । রেস্টহাউজের কেয়ারটেকারের কাছে এই বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করতেই সে চোখ বড় বড় করে বলল

-ভাইজান ঐ বাড়ির দিকে যাবেন না ।

তৃষা তখন বারান্দায় বসে কফির কাপে চুমুক দিচ্ছিলো । কেয়ারটেকারের কন্ঠ শুনেই ফিরে তাকালো । তারপর বলল

-কেন ?

-ঐ বাসাতে কেউ যায় না । সবাই এড়ায়া চলে । ঐ বাসাতে এক সাহেব থাকে । আগে শহরে থাকতো । তারপর একদিন এখানে এসে থাকা শুরু করে । কারো সাথে মিশে না । সে আর তার বউ থাকে । তবে অনেকে মনে করে তার বউ নাকি মানুষ না । মাঝে মাঝে রাতে ঐ বাড়ি থেকে অদ্ভুদ আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় ।

তৃষার চোখ দেখেই আমি বুঝে গেলাম যে ব্যাপারটা নিয়ে সে আগ্রহী হয়ে উঠেছে । তার মানে হচ্ছে আমাদের আগামীকাল ঐ বাসাতে যওয়াই লাগবে ! তাই আজকে আবার এখানে এসে হাজির হয়েছি ।

তৃষার গল্প - সিজন টুWhere stories live. Discover now