রাত একটা পার হলেই তৃষা একটা অদ্ভুদ শব্দ শুনতে পায় । তৃষার মনে হত কেউ যেন দুর থেকে চিৎকার করতে । কাউকে কোথাও আটকে রাখা হয়েছে । সেখান থেকে সে মুক্তি চাচ্ছে । এই জন্য সে চিৎকার করছে । তারপরেই সে শুনতে পেত তার জানলার কাঁচে কারো আওয়াজ শুনতে পেত । কেউ যেন ধাক্কা দিত । যেন দরজা খুলে দেওয়ার জন্য বলতো ।
এমনটা প্রতিদিন শুরু হত । এই বাসাতে থাকতে আসার পরপরই শুরু হয় এটা । রাত একটা বাজার পরপরই এমনটা শুরু হয় । কেউ যেন নক করে তার জানালার কাছে । তৃষার ভয় করতে শুরু করে ।
কিন্তু জানে এখানে ভয় পেয়ে লাভ নেই । ওর এক শিক্ষক বলতো যা তোমাকে ভয় দেখায় সেটার কাছে যেতে, দেখতে হবে সেটা আসলে কি চায় । তাহলেই সেই ভয়টা কেটে যাবে । তাই আজকে যখন আওয়াজটা শুরু হয় তখনই সে সিদ্ধান্ত নেয় সে আজকে জানালাটা খুলে দিবে । দেখবে সে জানালার কাঁচে আঘাত করে ।
আজকে আওয়াজ শুরুর সাথে সাথেই নিজের সব ভয়কে সে দুরে সরিয়ে দিল । জোরে একটা দম নিয়েই জানালার কাছে এগিয়ে গেল । আজকে সে জানলাটা খুলেই দিবে । দেখবে কে কাঁচের ওপাশে আছে । আজকে সে দেখবেই ।
কিন্তু কাঁচের কাছে আসতেই অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো আওয়াজটা আসলে জানলার কাছ থেকে আসছে না । যদিও আওয়াজটা এখনও আসছে । তবে সেটা জানালার কাছ থেকে নয় । অন্য এক কাঁচের উপর নক টা আসছে । তৃষার চোখ তখনই ঘুরে গেল । জানালার কাঁচ ছাড়া পুরো ঘরে কেবল একটাই কাঁচ আছে । সেটা হচ্ছে দেওয়ালে লাগানো ওর মুখ দেখার আয়নাটা । আওয়াজটা আসছে ঐ আয়নার ভেতর থেকে ।
তৃষার পুরো শরীরটা কেঁপে উঠলো । তবুও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৃষা আরও এগিয়ে গেল । আয়নাটার কাছে গিয়ে কান পাততেই ওর ও বুঝতে পারলো আয়নার ওপাশেই আওয়াজটা আসছে । কেউ যেন চিৎকার করছে । বারবার ধাক্কা দিচ্ছে । তৃষা কি করবে বুঝতে পারলো না । আয়নার ভেতরে সে কিভাবে যাবে ? আয়নার ওপাশে কে আছে ?
পরদিন সকালবেলা মিস্ত্রী এনে কাঁচটা খুলে ফেলল । এবং অবাক হয়ে আবিস্কার করলো যে ওর শোবার ঘরের ওপাশেই আরেকটা ছোট ঘর আছে । ঘরটার ভেতরে উকি দিতেই ওর চোখ চকরগাছ । ছোট ঘরটার ঠিক এক কোনাতে একটা মানুষের কঙ্কাল পড়ে আছে । কঙ্কালটার পায়ে একটা শিকল দিয়ে আটকানো ।
কেউ নিশ্চয়ই এই মানুষটাকে এখানে আটকে রেখেছিলো । তাকে আটকে সিল করে দিয়েছিলো । এখানে মারা যাওয়ার পরেও সে এখানে আটকে আছে । মারা যাওয়ার পরে যদি দেহটা ঠিক মত সৎকার না করা হয় তাহলে আত্মা দেহ ছেড়ে যায় না । এই জন্যই হয়তো সে এই আওয়াজটা শুনতে পেত ।
ঐদিনই পুলিশে খবরে দিয়ে দেহটার সৎকার ব্যবস্থা করলো সে । তারপর থেকেই রাতে আও সেই আওয়াজ শুনতে পাওয়া বন্ধ করে দিল । কেউ আর চিৎকার করে মুক্তি পেতে চাইতো না । তৃষা হয়তো সেটার ব্যবস্থা করে দিয়েছে । কিন্তু তারপরেও তৃষার মনে একটা কৌতুহল রয়েই গেল । কে এই মানুষটা ? কিন্তু সেটা জানার কোন উপায় নেই ।
YOU ARE READING
তৃষার গল্প - সিজন টু
Short Storyতৃষার গল্পের প্রথম সিজনের প্রতিটি গল্পই সবার পড়া । তবে সেই গল্প গুলো এখন ড্রাফটে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হয়তো ভবিষ্যতে কোন দিন আবার পড়ার সুযোগ পাবেন কেউ । আপাতত তৃষার গল্পের দ্বিতীয় সিজন শুরু হচ্ছে । গল্প গুলো প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে পড়ে ফেলুন । হয়...