আর্থ সেভেন্টিন

1.1K 29 7
                                    

এক

টিউশনি থেকে প্রতিদিন ফেরার সময় একটা ক্লান্তি এসে জমা হয়। কিছুতেই সাইকেল চালাতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় কেউ যদি আমাকে টেনে নিয়ে যেত তাহলে কতই না ভাল হত। তৃষাট অবশ্য আমাকে প্রায়ই বাইক কিনতে বলে। অনেকবার বলেছে যে সে নিজেই কিনে দিবে । আমার ইচ্ছে হয় নি । একে তো আমার বাইক চালাতে মোটেই ইচ্ছে না । তার উপরে ঢাকা শহরে বাইক মানেই হচ্ছে বাড়তি আরেকটা ঝামেলা। এমনিতেও আমার জীবনে ঝামেলার শেষ নেই। নতুন আরেকটা ঝামেলা নিতে মোটেই ইচ্ছে করছে না ।

আমি আস্তে আস্তে সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিতে থাকি। ৩২ নাম্বারে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পেছন দিকে আসতেই একটা কালো রঙের জিপ গাড়ি আমার পাশ ঘেষে চলে গেল, আরেকটু হলেই আমার সাথে ধাক্কা লেগে যেত। ফাঁকা রাস্তা পেয়েছে তাই ইচ্ছে মত টান দেয় । আমরা যে আসে পাশে থাকি সেটা তাদের চোখেই পড়েই না ।

আমার মুখ দিয়ে একটা খারাপ গালি আপনা আপনিই বের হয়ে এল ৷ বেটা গাড়ি চালানোর সময় নিজেদেরকে ভাবে কি? যদি কিছু হয়ে যেত তখন?

একটু দুরে গিয়েই দেখলাম গাড়িটা থেমে গেল৷ তখনই আমার কেন জানি মনে হল আমার দেওয়া গালিটা বেটা শুনে ফেলেছে। নিশ্চয়ই বেটা হোমড়াচোমরা টাইপের কেউ হবে।

গাড়ি থামার সাথে সাথেই দেখলাম গেট খুলে একজন বের হয়ে এল৷ কালো স্যুট পরে আছে লোকটা৷ এই রাতের বেলাতেও লোকটার চোখে কালো চশমা। আমার পথ রোধ করে দাড়ালো। বুঝতে পারলাম আজকে আমার কপালে খারাবিই আছে। পাশ কাটিয়ে বের হয়ে যাবো নাকি, এখনই সাইকেল ঘুরিয়ে পেছন দিকে পালাবো এই নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছি তখনই কালো চশমা পরা লোকটা আশ্চর্য মোলায়েম কন্ঠে বলে উঠলো

-মিস্টার অপু আপনার সাথে আমাদের স্যার কয়েকটা কথা বলতে চান।

আমি খানিকটা চমকে উঠলাম। এই লোক আমার নাম জানে। আমাকে চেনে। আমি যে এই রাস্তা দিয়ে যাই সেটাও বের করেছে। তার মানে বেশ কিছু দিন থেকেই আমার পিছু নিয়েছে এরা৷ এবং ওভাবে পাশ দিয়ে গাড়ি চালানোর অর্থ গাড়িটা ইচ্ছে করেই এভাবে চালিয়েছে, আমার মনযোগ আকর্ষণের জন্য কিন্তু আমি তো এতো গুরুত্বপূর্ণ কেউ নই৷ আমার সাথে এভাবে দেখা করার তো দরকার ছিল না।

তৃষার গল্প - সিজন টুDonde viven las historias. Descúbrelo ahora