কুয়া রহস্য

662 23 3
                                    

তৃষা আমার দিকে তাকিয়ে আরেকবার বলল
-তো তুমি যাবা না ? সিওর ?
-আরে আমি ওখানে গিয়ে কি করবো শুনি ? তুমি থাকবা নিজের কাজে ব্যস্ত । এমন না যে আমি ওখানে তোমার সাথে ঘুরতে যাচ্ছি ! আমি এখানে নিজের কাজ ফেলে যাবো ?

তৃষার মুখে একটা দুষ্টামীর হাসি দেখতে পেলাম । তারপরই সে বলল
-আচ্ছা না গেলে আর কি ! তবে ধর যে আমি একা যাচ্ছি । ঐদিনে ভদ্রলোক আবার দেখতে বেশ চমৎকার তার উপর স্ত্রী তাকে ছেড়ে গেছে । তোমাদের পুরুষ মানুষদের তো বিশ্বাস নেই । ধর....।

তৃষা খুব ভাল করেই জানে আমাকে ঠিক কোন জায়গাতে ধাক্কা দিতে হয় । আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম
-থাক থাক । ধরাধরি বাদ দাও । আগে দাড়াও ছুটি ম্যানেজ করে নিই । একদিন হলে চলবে তো !
-আরে একদিন হলেই চলবে । যাবো । কাজ করবো তারপর চলে আসবো ।
-তোমার মত আর আমার না । চাইলেই ছুটি পাওয়া যায় না ।

তৃষা কেবলই হাসলো । কারন সে খুব ভাল করেই জানে সেখানে সে যতদিনই থাকুক না কেন আমিও তার সাথে সেখানে ততদিনই থাকবো । তাকে ছেড়ে নড়বো না ।

এবার বায়ারের সাথে ঢাকাতেই ডিলটা হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু মাঝখান দিয়ে একটা ঝামেলা বেঁধে গেল । তার নাকি শরীর খারাপ হয়ে গেছে । বিছানায় পড়ে আছেন । এদিক দিয়ে সব কিছুই তৈরি কেবল মুখো মুখো একটা সাক্ষাত হলেই বাকি কাজ হয়ে যাবে । কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না ভদ্রলোকের হঠাৎ শরীর খারাপ হওয়ার কারনে । তিনি এখন ঢাকা নেই । তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে থাকছেন একটু শান্তির জন্য । তাই তৃষা ঠিক করেছে সেখানে গিয়েই সব কিছু ঠিক করে আনবে । আর তার সাথে তাই আমাকেও যেতে হবে ।

কি আর করা ! বউ বলে কথা !

ভদ্রলোকের নাম আহমেদ শরীফ । গাজিপুরে তার বিশাল বড় কাপড়ের ফ্যাক্টারি আছে । তার বাসাটা গাজিপুরের আরও ভেতরে । ঘন্টা দুয়েকের পথ । দুপুরের মধ্যেই আমরা সেখানে পৌছে গেলাম । বাড়িট নাম আন্দরমহল । আহমেদ শরীফের গ্রামের এই বাড়িটাকে ঠিক বাসা বলা চলে না । এটা একটা বিশাল রাজ প্রাসাদ । গাড়ি থেকে নেমে কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম সেই বাড়িটার দিকে । দুইতলা বিশাল অট্টালিকা । ডান দিকে সান বাঁধানো বিশাল পুকুর । তারপরেই বেশ কিছুটা বন । প্রকৃতিক কোন জঙ্গল না । মানুষের বানানো জঙ্গল । আর বাড়ির বাঁ দিকে একটা ছোট্ট ও্য়্যার হাউজের মত দেখতে পেলাম । তার তার পাশেই একটা কুয়া । তবে কুয়ার মুখটা কাঠ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে । সব মিলিয়ে চমৎকার একটা বাগান বাড়ি । বাড়ির সব থেকে বেশি যে জিনিসটা ভাল লাগছে সেটা হচ্ছে নির্জনতা । এতো নির্জন পরিবেশে অনেক দিন আসা হয় নি ।

তৃষার গল্প - সিজন টুWhere stories live. Discover now