বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে । রাতের বেলা এতো বৃষ্টি তৃষার অবশ্য খুব একটা খারাপ লাগে না । তবে আজকে ওর মনটা খারাপ । বেশ খারাপ । জানলা দিয়ে যতবার রাস্তার দিকে তাকাচ্ছে ততই ওর মন খারাপটা বেড়ে যাচ্ছে ।
বারবার মনে হচ্ছে কেউ কাউকে এতো ভাল কিভাবে বাসে ? বারবার মনে হয় কেউ যদি ওকে এভাবে বাসতো !
আরেকবার তাকিয়ে দেখলো বাসার সামনের রাস্তাটার দিকে । একটা সাইকেল দাড় করানো রয়েছে । ঠিক তার পাশেই রেইনকোর্ট পরে একটা ছেলে বসে আছে চুপ করে । এই তীব্র বৃষ্টিতে এমনিতেও কেউ বাইরে বের হয় নি । যারা যারা বের হয়েছিলো তারা যত দ্রত সম্ভব বাসার দিকে চলে যাওয়ার চেষ্টায় আছে অথচ এই ছেলেটা বসেই আছে ।
তৃষা জানে ছেলেটা ঠিক সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত বসে থাকবে । তারপর চলে যাবে । প্রতিদিন অপেক্ষা করে । এমন ভাবে অপেক্ষা করে !
কি অদ্ভুদ মানুষের জীবন ! কি অদ্ভুদ এই মানুষের ভালবাসা !
তৃষারা এই বাসাতে ভাড়া এসেছে খুব বেশি দিন হয় নি । মাস তিনেক হয়েছে । তৃষার রুমটা একদম রাস্তার পাশেই । দিনের বেলা জানলা খোলার উপায় নেই রাস্তার গাড়ি ঘোড়ার আওয়াজের কারনে তবে রাতের বেলাটা বেশ কাটে । এই দিক দিয়ে বেশ বাতাস আসে ।
তেমনই একদিন তৃষা একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলো । একটা ছেলে ওদের বাসার সামনের ফুটপাথে বসে আছে । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রায় এগারোটা বেজে গেছে । তেমন কিছু মনে করলো না । কারন এটা রাস্তা । যে কেউ বসে থাকতে পারে । কিন্তু পরপর যখন সাত দিন বসে থাকতে দেখলো তখন খানিকটা কৌতুহলী হয়ে উঠলো ।
একটু সময় হিসাব করে দেখলো ছেলেটা প্রতিদিন রাত সাড়ে দশটার দিকে আসে । তারপর সাইকেলটা দাড় কড়িয়ে বসেই থাকে । কোন কথা বলে না । মাথা নিচ করে বসেই থাকে । সাড়ে এগারোটা বাজলে আবারও উঠে চলে যায় !
তৃষার খুব কৌতুহল হয় । ছেলেটা কেন বসে থাকে ? খুব জানতে ইচ্ছে করে ।
একদিন ক্যাম্পাস থেকে বাসায় আসার সময় দারোয়ান মামাকে বলল ব্যাপারটা । একটু বলতেই মামা চিনতে পারলো । দারোয়ান মামা বলল যে ছেলেটাকে চিনে আর কেন বসে থাকে সেটাও জানে ! ছেলেটার মাথায় নাকি একটু সমস্যা আছে ।
YOU ARE READING
তৃষার গল্প - সিজন টু
Short Storyতৃষার গল্পের প্রথম সিজনের প্রতিটি গল্পই সবার পড়া । তবে সেই গল্প গুলো এখন ড্রাফটে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হয়তো ভবিষ্যতে কোন দিন আবার পড়ার সুযোগ পাবেন কেউ । আপাতত তৃষার গল্পের দ্বিতীয় সিজন শুরু হচ্ছে । গল্প গুলো প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে পড়ে ফেলুন । হয়...