টুকরো জীবন দৃশ্য

1.2K 41 1
                                    

সকালের রোদ মুখে এসে লাগছে। পর্দাটা একটা ফাঁক হয়ে আছে। সেখান থেকেই রোদ ঢুকছে। আমি তবুই চোখ বন্ধ করেই রইলাম। আজকে এতো জলদি ঘুম থেকে ওঠার কোন মানে নেই।

কিন্তু আমি শুয়ে থাকতে চাইলে কি হবে, অন্য জনেরও তো চাইতে হবে। তৃষা সেই কখন থেকে নড়াচড়া করছে। আমি চোখ না খুলেই বললাম
-এতো নড়ছো কেন?
তৃষা বলল
-সকাল হয়ে গেছে। উঠবে না?
-সকাল হয়েছে কে বলল?
তৃষা আমার বুকের ভেতরে আরও একটু নড়ে চড়ে উঠলো। তারপর বলল
-ঘর আলো আসছে কোথা থেকে? সর উঠবো।
ওকে আরও একটু শক্ত করে চেপে ধরে বললাম
-এখনও গভীর রাত। আজকে পূর্নিমা না? এই জন্য ঘরে আলো আসছে।
-তাই না?
-সত্যি।
এবার আর আমি ওকে ধরেই রাখতে পারলাম না। আমার বাহু বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে সে বিছানার উপরে উঠে বসলো। তারপর মোবাইলটা খুজে বের করে সেটার আলো জ্বাললো। আমার দিকে তাকিয়ে একটু মুখে কৃত্রিম রাগ এনে বলল
-এই তোমার গভীর রাত?
আমি হেসে বললাম
-আমার কাছে তো রাতই।
-শুনো ঢং করবা না।
-করবো না? কেন করবো না শুনি? ঢং করে করে তোমাকে পটিয়ে ফেললাম। আরও কত কিছু হয়ে গেল। আর তুমি বলছো ঢং করবো না।
-হয়েছে হয়েছে। এখন জলদি ওঠ। আজকে আমাদের কোথায় যেতে হবে মনে আছে তো।

আমি কোন কথা বললাম না। কাল রাতে এটা নিয়ে আমাদের মাঝে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। আজকে ওর এক জায়গাতে যাওয়ার কথা। কেবল ওর না, আমারও। কিন্তু আমি সেখানে যেতে চাই না। তৃষা আমাকে নিয়ে যাবেই। আমার মুখের ভাব দেখেই তৃষা বলল
-এমন পেঁচার মত মুখ কেন করে রেখেছ শুনি?
-তো কি করবো?
-এটা নিয়ে আমাদের কাল রাতে কথা হয়েছে না?
-তো? আমি যেতে চাই না। আর চাই না তুমিও যাও।

দেখলাম তৃষা আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর গালে একটা চুমু খেয়ে বলল
-এমন বাচ্চাদের মত কেন কর?
-তুমি জানো না কেন করি। কই বড় ভাইয়ার বাসায় যখন যাওয়ার কথা হয় তখন তো কিছু বলি না, বলি? অন্য কারো বাসায় যাওয়ার সময় তো কিছু বলি না। কেবল ওর বাসায় আমার যেতে ইচ্ছে করে না। তোমাকেও যেতে দিতে ইচ্ছে করে না।
-আরে ও তো আমার ভাই নাকি?
-কিন্তু সে তোমাকে বোনের দৃষ্টিতে দেখে না। দেখে?
-কিন্তু আমি তো দেখি।
-সেটা আমার সমস্যা না। তোমাকে যে অন্য চোখে দেখবে তাকে আমি স্বাভাবিক চোখে দেখতে পারবো না। এটা জানো তুমি।

তৃষার গল্প - সিজন টুWhere stories live. Discover now