Chapter 4 | Part 3

132 5 0
                                    


নির্বাণ বাড়ি ফিরে দাদা আর মায়ের সাথে খোলাখুলি কথা বলে অভূতপূর্ব ফল পেল। সুন্দর সম্পর্কগুলো অনিচ্ছাকৃত আবর্জনার ভারে নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছিল, কিন্তু সোনালির সৎ পরামর্শে এবং দু-পক্ষের সক্রিয় তত্ত্বাবধানে যাবতীয় জঞ্জাল ঝেড়ে ফেলে মুক্তির স্বাদ পেল। দুই ভাই যে যার খাটে বসে অনেকদিন পর আবার অনেক রাত অবধি জমিয়ে আড্ডা মেরে শান্তি পেল। আড্ডায় মধ্যমণি হয়ে যেমন সোনালি ছিল, তেমনি নির্মাল্যর বান্ধবী তিন্নির প্রসঙ্গও নূতন করে উঠল। নির্বাণ নিজের প্রেমের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝল, দাদা আর তিন্নির সম্পর্কেও একটু তদারকি দরকার, তাই দু-একটা জরুরী টিপস দিয়ে দিল। সোনালির বুদ্ধি আর ভালোবাসাকে সম্বল করে সে রাতের মতো নিশ্চিন্তে শুয়ে পড়ল নির্বাণ।

পরদিন যথাসময়ে নির্বাণ খুব খুশী মনে সোনালির জন্য একটা উপহার নিয়ে হাজির হল গন্তব্যে। সোনালি উপহার পেয়ে বেজায় খুশী। মোড়ক খুলে দেখল, তার পছন্দের চকলেট। বসবার ঘরে বসে সবাই মিলে আনন্দ করে খাওয়া হল, যোগ দিলেন মিসেস সান্যালও। আড্ডা শেষ করে আবার পড়ায় মন দিলো দু'জন। 'সিলেবাস' অনেকদিন আগেই শেষ হয়ে গেছে, এখন শুধু রিভিশনের পালা। পড়ার ফাঁকে বিকেলে বারান্দায় চায়ের বিরতিতে বসে, আকাশের দিকে তাকিয়ে নির্বাণ আনন্দে আত্মহারা। ঝকঝকে নীল আকাশ, একেবারে স্পটলেস, কোথাও এক বিন্দু অন্য রং নেই, ছিটেফোঁটা সাদা মেঘও নয়। নির্বাণ দু-হাতের বুড়ো আঙুল দুটো জুড়ে অন্য আঙুলগুলো সমকোণে রেখে একটা ফ্রেম বানিয়ে, ক্যামেরা প্যান করার মত সরিয়ে সরিয়ে দেখতে লাগলো। সোনালি চা বানাতে বানাতে লক্ষ্য করছিল। নির্বাণকে প্রশ্ন করল, "তোমার নিশ্চয়ই ছবি তোলার শখ আছে।"

নির্বাণ এক চোখ বন্ধ করে ফ্রেমের ভেতর দিয়ে দেখতে দেখতে বলল, "তেমন কিছু নয়, তবে এইভাবে দেখতে ভাল লাগে। একসময় মনে করেছিলাম সিনেমা তৈরি করবো, যদিও জানি সম্ভব নয়।"

সোনালি চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, "অসম্ভব বলে কিছু নেই। সব সম্ভব।"

নির্বাণ চায়ের টেবিলে ফিরে এসে বলল, "আমার এ বিষয়ে কোন অভিজ্ঞতা নেই, পড়াশুনা নেই।"

Khelaghar | খেলাঘরOù les histoires vivent. Découvrez maintenant