Chapter 5 | Part 1

100 5 0
                                    


নির্বাণদের পরীক্ষা শেষ। ছেলেদের আর মেয়েদের আলাদা আলাদা কলেজে সিট পড়েছিল। তবে পরীক্ষার শেষে নির্বাণ প্রতিদিন সোনালিদের বাড়িতে বারান্দায় বসে জমিয়ে চা খেয়ে তারপর বাড়ি যেত। পরীক্ষা দু'জনেরই খুব ভাল হয়েছে তাই মনও খুশী। অনেকদিন টানা পড়াশুনার পর এখন ছুটির মেজাজ। নিউ মার্কেট, নন্দন, গঙ্গার ঘাট, সিটি সেন্টার সব জায়গাতেই একসাথে দেখা যাচ্ছে দু'জনকে। আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে ছবির স্ক্রিপ্ট, গল্পের পরিণতি কি হবে? সোনালি জিজ্ঞাসা করল, "নির্বাণ, শ্যামাবাবু তারপর কি করবেন?"

সোনালির উৎসাহে নির্বাণ উজ্জীবিত হয়ে একটু ভেবে আগের দিন যেখানে শেষ করেছিল সেখান থেকে আবার শুরু করলো, "শ্যামাদা বারবার 'চম্পা' 'চম্পা' বলে ডাকছে। অন্যরা যত ওকে শোয়াতে চাইছে ততই উঠে বসে বারবার বলছে, চম্পা আজ আমার জীবন বাঁচিয়েছে, ও কোথায় দেখো।"

চম্পা নামটা নূতন, সোনালির মনে খটকা লাগায় প্রশ্ন করল, "চম্পা আবার কে?"

"চম্পা হচ্ছে একটা চিলের নাম। ক্যামেরা এবার শ্যামাদার বাড়ির সামনে লম্বা একটা নারকোল গাছের উপর বসে থাকা চিলকে ধরল। চিলটা গম্ভীরভাবে বসে আছে, কয়েকমুহূর্তের ক্লোজআপে দেখা গেল চোখের পাতা একবার বন্ধ করে খুলল। এদিক-ওদিক তাকিয়ে চিলটা উড়ে গেল। এবার ক্যামেরা ঢুকে পড়েছে শ্যামাদার ঘরে, মধ্যমণি হয়ে বসে খুব গর্বের সাথে বিস্তারিত বর্ণনা করছে - কিভাবে চম্পা ওর জীবন বাঁচাল। ঘটনা হল, শ্যামাদা যখন রেললাইন পার হচ্ছে, তখন একবারের জন্যও ডান-দিক, বাঁ-দিকে দেখেনি, ট্রেন যে ঘাড়ের কাছে খেয়ালই করেনি। চম্পা কোথা থেকে উড়ে এসে ওর মাথায় ঠোক্কর মারে তাতেই শ্যামাদা সম্বিত ফিরে পায়, এবং আবিষ্কার করে এক হাত দূরত্বে গাড়ি। স্বয়ং যমদূত হাজির তার প্রাণ নেবে বলে। আর কোন উপায় নেই দেখে সহজাত প্রবৃত্তি থেকেই, ছিটকে গিয়ে দেওয়াল আশ্রয় করে দাঁড়ায়, এবং জ্ঞান হারায়। চম্পা যদি শেষ সময় না আসতো, তাহলে অব্যর্থ মৃত্যু।"

সোনালি একমনে শুনছিল। নির্বাণ চুপ করায় বলল, "বাবা, এত রোমহর্ষক কাহিনী।"

Khelaghar | খেলাঘরDonde viven las historias. Descúbrelo ahora