Chapter 13 | Part 4

89 3 0
                                    

গ্রানাইট পাথর যে এত নরম হতে পারে, সেই বিষয়ে সোনালির কোনও ধারণাই ছিল না--প্রথম উপলব্ধি করল। ডাবল ম্যাট্রেস পাতা বাড়ির বিছানায় শুয়েও এই আরাম কখনো অনুভব করেনি। নির্বাণের শরীরের ঘ্রাণ পৃথিবীর সবচেয়ে নামী-দামী পারফিউমের চেয়েও আকর্ষক তাতে তার বিন্দুমাত্র সন্দেহ রইল না। নির্বাণের বলিষ্ঠ দু-বাহুর মাঝে সোনালি সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান পেল। কারও চোখে পলক পড়ছিল না। সোনালির কপালে এসে পড়া এলোমেলো চুলগুলো নির্বাণ সযত্নে একের পর এক সাজিয়ে রাখছিল কানের দু-পাশে। দু'জনেই খুব ভাল করে জানে যে, আজকের এই মধুর মুহূর্ত সারা জীবনের অমূল্য সম্পদ--তাকে রক্ষা করতে হবে, মর্যাদা দিতে হবে, শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

ফোন বাজছে শুনে সোনালি তাড়াতাড়ি ফোন হাতে নিতেই দেখল--মায়ের ফোন। মায়ের উপস্থিতি কল্পনা করেই হোক, বা অন্য কিছু ভেবে, সোনালির মনে হল--কেউ তাদের দেখছে। যাইহোক, দ্বিধা কাটিয়ে 'হ্যালো' বলতেই মিসেস সান্যাল বললেন, "কি রে! বাড়ি ঠিক হল?"

সোনালি 'হ্যাঁ' বলতেই মিসেস সান্যাল মেয়েকে আর কোন কথা বলতে না দিয়ে নিজে বললেন, "শিগগির চলে আয়, ভালো করে শুনি। আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে তা তোকে বলে বোঝাতে পারব না।"

"আসছি", বলেই নির্বাণকে নিয়ে সোজা বাড়ি।

ঘুরে ঢুকেই সোনালি মায়ের হাতে যোধপুরপার্কের ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দিয়ে বলল, "মা, এই নাও চাবি।"

মেয়েকে আদর করে মায়ের জবাব, "শুধু চাবি নয়, বল সুখের ঘরের চাবি, নিজেদের নূতন করে আবিষ্কার করার চাবি।"

চারজন মিলে আবার বাড়ি দেখতে গেলেন। সোনালিদের এই নিয়ে এক দিনে তৃতীয় দর্শন। মিসেস সান্যাল শোবার ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মুগ্ধ। সান্যালসাহেব বললেন, "হরিশের বাড়িটা কাছাকাছি কোথাও হবে।" সুনিপাদেবী সাথে সাথে বললেন, "ফোন করো না হরিশকে।" সান্যালসাহেব হেসে উত্তর করলেন, "এই তো হরিশের রহস্য! কোথায় কখন থাকে কেউ জানে না, সেখানে এখন দিন না রাত কিছুই জানা নেই, থাক পরে দেখা যাবে।" সারাদিন খুব মজা করে কাটল, রাতে বাইরে খেয়ে, নির্বাণকে বাড়িতে পৌঁছে সোনালিরা বাড়ি ফিরল রাত একটা।

Khelaghar | খেলাঘরDonde viven las historias. Descúbrelo ahora