Chapter-17 | Part - 3

90 2 1
                                    


সোনালি চোখের সামনে যা দেখছে তা সে দেখতে চায় না। দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি যে তাকে কোনদিন এই সব দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে হবে। দ্বিধান্বিত সোনালির মুখের আদল বদলে গিয়েছে, অতি যত্নে লালিত মাথা ভর্তি চুল, শ্রী-হীন হয়ে মাথা থেকে অনিচ্ছাকৃতভাবে ঝুলে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ভাগ্যিস কোন আয়নায় তার চোখ পড়েনি, নিজের সেই অবিন্যস্ত দিশাহারা চেহারা দেখলে নিঃসন্দেহে মর্মাহত হয়ে পড়ত।

নির্বাণের কথার রেশ ধরে বলল, "তোমার কি ধারণা তুমি বেঁচে আছ? দুঃখিত! বলতে বাধ্য হচ্ছি, তুমি বেঁচে নেই। অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জনের যে জঘন্য পথে তুমি ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে চলেছ, তার শেষে ফাঁদ পেতে বসে রয়েছে গাঢ় অন্ধকার; এক বিন্দু আলোর সন্ধান তুমি সেখানে পাবে না।"

সোনালি তখনো খাটের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে লক্ষ্য করে, নির্বাণ হাত বাড়িয়ে ধরতে চেষ্টা করল, কিন্তু সোনালি ছিটকে গেল। নির্বাণ তাকে স্পর্শ করার অধিকার হারিয়েছে, তা পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিল। পুরানো একটা প্রসঙ্গ মনে পড়ায় আবার সোনালি শুরু করল, "মনে পড়ে নির্বাণ, কয়েকবছর আগে ভারতবর্ষের নানা শহরে তুমি লেকচার দিয়ে বেড়িয়েছিলে। তোমার আলোচ্য বিষয় ছিল--'ট্রেডিং উইথ হেজিং।' সেদিন তুমি হেজিং বলতে কি বোঝাতে চেয়েছিল, তা তুমিই সবথেকে ভালো জানো, কিন্তু তার সাথে তোমার আজকের কথার মিল খুঁজে পাচ্ছ কি?"

নির্বাণ বিভ্রান্ত। সোনালিকে এত রেগে যেতে কখনো দেখেনি। বোকার মতো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল ল্যাপটপের স্ক্রিনে, কিন্তু মনে চলছে অন্য ছবি--বাস্তব জীবনের ছবি, চলচ্চিত্র নয়। নির্বাণ জানে--সোনালির লক্ষ্য অব্যর্থ, সে একেবারে সঠিক বিন্দুতে অঙ্গুলিসংকেত করেছে। ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহরে ঘুরে কোন মিথ্যা তথ্য সাড়ম্বরে সরবরাহ করতে সে নিশ্চয়ই যায়নি। কিন্তু সেদিনের স্বপ্ন আর বর্তমান পরিস্থিতিতে তার অবস্থান অনেক পালটে গিয়েছে। নির্বাণ জীবনের সবচেয়ে দামী সময় অবহেলায় আলসেমি করে কাটিয়ে দিয়েছে এমন নয়। জীবনে চলার পথে পদে পদে শিক্ষা নিয়েছে, হয়তো ভুল শিক্ষা।

Khelaghar | খেলাঘরOù les histoires vivent. Découvrez maintenant