ক্ষণিক চুমু

225 14 0
                                    

তৃষা এক পাশে মুখ সরিয়ে নিল । আবার বলল, নোপ !

অপু আবারও খানিকটা অনুনয় করে বলল, প্লিজ ।

-নো মানে না !

এই বলে তৃষা নিজেকে আবার একটু ছাড়ানোর চেষ্টা করলো তবে লাভ হল না । অপু ঠিক ওর সামনে দাড়িয়ে । তৃষার হাত দুটো ওর পেছনের দিকে নিয়ে গিয়ে ধরে রেখেছে । অনেকটা জড়িয়ে ধরার মত করে ধরে রেখেছে ওকে । জায়গাটা ওদের বাসার ছাদে, এক কোণে । এই সময়ে ছাদে কেউ নেই । আর ছাদে কেউ চলেও চট করে ওদের দেখতে পাবে না ।

আজকে ভালোবাসা দিবস হলেও ওরা বাইরে যাওয়ার সুযোগ পায় নি । স্কুল কোচিং সব বন্ধ এখন । কোন অযুহাত দেওয়া যায় নি। তাই লুকিয়ে ছাদে চলে এসেছে যদিও খুব বেশি সময় থাকার সময় নেই । একটু পরেই নিচে ফেরত যেতে হবে ।

অপু আবার বলল, আজকে পহেলা ফাল্গুল তার উপরে ভ্যালেন্টাইন । আজকে একটা বার অন্তত চুমু খেতে দাও প্লিজ !

-না মানে না ।

-না দিলে ছাড়বো না ।

-ছেড়ও না । ধরে থাকো ।

তৃষা তাকালো অপুর চোখের দিকে । অপুর চোখের পাপড়ি একটু যেন কাঁপছে । চোখের ভেতরে ওকে চুমু খাওয়ার তীব্র একটা আকাঙ্খা । অপুর এই ব্যাপারটাই তৃষার সব থেকে বেশি পছন্দ । অপু কোন সময় লাইণ ক্রস করে না । এই যে এখন অপু তৃষার হাত ধরে আছে । বলা চলে তৃষা এখন অপুর কাছে বন্দী। এমন একটা অবস্থায় আছে যে চাইলে অপু ওকে যত গুলো ইচ্ছে চুমু খেতে পারে । এবং তৃষা হয়তো এতে খুব একটা রাগও করবে না । এই তথ্যটা অপুও জানে খুব ভাল করেই । তারপরেও অনুমুতি চাইছে । তৃষা খুব ভাল করে জানে ও যত সময় না হ্যা বলবে ততসময় অপু কিছু করবে না । এই বিশ্বাস টুকু ওর আছে । অপু আবার বলল, দিবে না?

-না !

-কেন ?

-আমার ইচ্ছে ।

অপু ছেড়ে দিলো তৃষার হাত । তারপর একটু মন খারাপ করে সরে গেল । পাশের পেতে রাখা সিমেন্টের বেঞ্চে বসে পড়লো । তৃষাও বসলো ওর পাশেই । তারপর পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফেসবুক অন করলো । এমন একটা ভাব করতে লাগলো যেন কিছুই হয় নি । তৃষার মনে মনে বেশ মজাই লাগছিলো । এমন সময়ই মোবাইল বেজে উঠলো । তৃষার মা ফোন দিয়েছে ।

-হ্যালো মা ।

-কই তুই ?

-মা এই তো ছাদে এসেছি একটু ।

-ছাদে কি এখন । এখনই ঘরে আয় !

-আচ্ছা ।

ফোন রেখে অপুর দিকে তাকিয়ে বলল, আচ্ছা মা ডাকছে । আমি গেলাম । সন্ধ্যায় পারলে আসবো নে আবার !

-আচ্ছা !

-এভাবে মুখ গোমড়া করে রেখেছো কেন শুনি!

-এমনি । যাও । আন্টি ডাকছে ।

-তাড়িয়ে দিচ্ছো ? আচ্ছা চলে যাচ্ছি ।

এই বলে তৃষা হঠাৎ করেই অপুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো । তারপর আলতো করে চুমু খেল ওর ঠোঁটে । তারপর বলল, তোমাকে ভালোবাসি অপু । সব থেকে বেশি ভালোবাসি !

তৃষা দেখতে পেল অপুর চেহারা একেবারে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে মুহুর্তেই । তবে তৃষা আর থামলো না । ওর লজ্জা করতে শুরু করেছে । এই সময়ে অপুর দিকে ও একদমই তাকাতে পারবে না । ফোনটা হাতে নিয়ে এক ছুটে দৌড় দিলো সিড়ি ঘরের দিকে ।

পেছন থেকে কেবল একটা বাক্যই কানে এল ওর । অপু ওকে সাবধানে সিড়ি দিয়ে নামতে বলছে ।


পরমানু গল্প গুচ্ছWhere stories live. Discover now