শোবার ঘরে এসে মিতুর একটু মেজাজ খারাপ হল । বিছানাটা একেবারে এলোমেলো হয়ে আছে । দুদিন সে বাসায় ছিল না । অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে গিয়েছিলো আজকে সকালে ফিরে এসেছে । অপু ততক্ষনে অফিস চলে গেছে । এই দুইদিনে বাড়ি ঘর কেমন হয়েছে সেটা এখনও দেখার সুযোগ পায় নি । অবশ্য অপু খুব বেশি অগোছালো না । তারপরও পুরুষ মানুষ বলে কথা । এই যেমন অপু ঘুম থেকে উঠেছে বটে কিন্তু বিছানাটা একই রকম রেখে গেছে । পাতলা কম্বলটা একটু ভাজ করে রাখা আর বিছানাটা একটু গুছিয়ে রাখলে কী এমন সমস্যা হত !
মিতু পাতলা কম্বলটা টা তুলতেই তার নিচ থেকে আরও কিছু বের হয়ে এল । কম্বলটা একপাশে সরিয়ে রেখে মিতু বিছানাতে বসে পড়লো । হাত দিয়ে কিছু সময় সেটা স্পর্শ করলো । একভাবে তাকিয়ে রইলো সেদিকে । ব্যাপারটা বুঝতে একটু সময় লাগলো বটে কিন্তু যখন বুঝতে পারলো তখন মনের ভেতরে একটা অসম্ভব ভালো লাগার অনুভূতি অনুভূত হল। চোখের কোনে একটু জল এসে জমা হল অপুর জন্য ।
পাগল একটা !
দেওয়ালের ঘড়ির দিকে তাকালো । হাতে এখনও মোটামুটি ঘন্টা চারেক সময় আছে । আজকে আর অফিস যাওয়ার দরকার নেই । অফিস থেকে আজকে ছুটি দিয়েছে । ভেবেছিলো আজকে আর কোন কাজ করবে না । সারা দিন বিশ্রাম নিয়ে কাটিয়ে দিবে । তবে সেই পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দিল । যদিও ওর শরীর এখন ক্লান্ত নয় । আসার সময় ট্রেনের এসি বাথেই এসেছে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে । ঘুমের কোন দরকার নেই ।
ফ্রিজ খুলে দেখলো দরকারী সব কিছু আছে কিনা । নয়তো এখন আবার বাজারে যেতে হবে । মিতু দেখলো যা যা রান্না করতে চাইছে সব কিছুই আছে । দ্রুত কাজ শুরু করে ছিল । অপুর লাঞ্চ আওয়ারের আগে ওর অফিসে গিয়ে হাজির হতে হবে ।
মিতুর সাথে অপুর বিয়ে হয়েছে খুব বেশি দিন হয় নি । মাস ছয়েক হয়েছে কেবল । দুজনেই ঢাকাতে চাকরি করে । বিয়েতে খুব বেশি ধুমধাম করাও হয় নি । একদিন বিয়ে তার আগের দিন গায়ে হলুদ । বিয়ের তিনদিন পরে আবার দুজনে ঢাকাতে ফিরে এসে অফিসে যোগদান করে । দিন পনের পরে তারা এক সাথে থাকতে শুরু করে । এভাবেই ওদের জীবন এগিয়ে চলছে ।
YOU ARE READING
পরমানু গল্প গুচ্ছ
Short Storyমাঝে মাঝে জীবনের গল্প বলতে হাজার শব্দ লাগে না। মাত্র অল্প কয়েকটা লাইন দিয়েই বলা হয়ে যায় পুরো গল্প। পরমানু অনু গল্প গল্প গুলো এমনই। ছোট গল্পের জগতে আপনাকে স্বাগতম ।