মিশুর বিরক্তিটা বাড়ছে ধীরে ধীরে । কিন্তু সে চুপ করে আছে । বাইকের পেছনে বসে থাকতে ওর ভাল লাগছে না। আজকে বিকেলে বের হওয়াটা মোটেই ঠিক হয় নি । কিন্তু কিছু করারও ছিল না । সাব্বিরের এক মামার বাসায় দাওয়াত ছিল । নতুন বিয়ে হয়েছে ওদের । এর পর থেকেই প্রতি শুক্রবার কিংবা শনিবার কারো না কারো বাসায় দাওয়াত থাকেই । নতুন বউ বলে কিছু বলতেও পারে না । সব খানে যেতে হয় । এখন বাইকের পেছনে বসে বিরক্ত হচ্ছে ।
সেই সময়েই টিপটিপ করে বৃষ্টি শুরু হল । মিশুর বিরক্তিটা যেন আরও একটু বাড়লো । এমনিতেও জ্যাম তার উপর আবার বৃষ্টি ! সায়েন্স ল্যাবের এই সিগনালটা কখন ছাড়বে কে জানে । কত সময় বসে থাকবে ও !
হঠাৎ সাব্বির নিজের মাথার হেলমেট খুলে মিশুর দিকে বাড়িয়ে দিল । বলল
-এটা মাথায় পরে নাও ।
মিশু খানিকটা অবাক হয়ে বলল
-কেন ? হাতে ধরে রাখি !
-আরে বাবা বৃষ্টি পড়ছে দেখছো না ! তোমার মাথা ভিজলে রাতে আর শুকোবে না । নাও পরে না !
মিশু বলল
-তোমার মাথাও ভিজে যাবে !
-আমার মাথা ভিজলে সমস্যা নেই । তোয়ালে দিয়ে এক টান মারলেই শুকিয়ে যাবে । তোমার টা ভিজলে সমস্যা !
মিশুর মনটা হঠাৎ করেই ভাল হয়ে গেল । বিরক্তটা কেটে গেল মুহুর্তেই । সাব্বির আবার বলল
-আর ইদানিং রাতে তোমার চুলের গন্ধ না পেলে ঠিকঠাক মত ঘুম আসে না !
মিশু মৃদু হেসে সাব্বিরের পিঠে একটা কিল দিয়ে বলল
-আচ্ছা আমার চুল ভেজা নিয়ে চিন্তিত না, উনি চিন্তিত উনার ঘুম নিয়ে !
সাব্বির হেসে উঠলো । এতো জোরে যে আশে পাশের মানুষ জন ওদের দিকে তাকিয়ে ফেলল । মিশু কিছু বলতে যাবে তার আগেই সাব্বির বলল
-ধরে বসো । সিগনাল ছেড়ে দিয়েছে !
সত্যি তাই সিগনাল ছেতে দিয়েছে । মিশুর মাথায় হেলমেটটা মাথায় পরে সাব্বিরের কোমড় চেপে ধরলো আবার । সাব্বির বাইক টান দিল !
==========
গল্পটাতে কিঞ্চিত সত্যতা আছে । কয়েক মাস আগে সায়েন্সল্যাবের এক তীব্র জ্যামে সাইকেলের উপর বসে এমনই একটা দৃশ্য চোখে পড়েছিলো আমার । আমার থেকে কিছু দুরে এক কাপল বসে ছিল বাইকে । কত সাধারন একটা ঘটনা অথচ কি চমৎকার ভালবাসা লুকিয়ে আছে এর ভেতরে !
YOU ARE READING
পরমানু গল্প গুচ্ছ
Short Storyমাঝে মাঝে জীবনের গল্প বলতে হাজার শব্দ লাগে না। মাত্র অল্প কয়েকটা লাইন দিয়েই বলা হয়ে যায় পুরো গল্প। পরমানু অনু গল্প গল্প গুলো এমনই। ছোট গল্পের জগতে আপনাকে স্বাগতম ।