পরমানু গল্প গুচ্ছ

অপশন

নিশি আমার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর মুখে বলল
-তোমার সাথে মিমির কিছু চলছে ?

বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারছিলাম ক্যাম্পাসে । সেখান থেকে আমাকে পুকুর পাড়ে ডেকে নিয়ে এল । তারপর আমার দিকে গম্ভীর ভাবে জানতে চাইলো কথাটা । বলল
-ইদানিং প্রায়ই দেখি ও তোমার আসে পাশে ঘোরাফেরা করে । রাতে ফোনও করে নিশ্চয়ই ?
আমি খুব স্বাভাবিক কন্ঠে বললাম
-হ্যা । চলছে ।

নিশি বিশ্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । আসলে ও ভাবতেও পারে নি আমি সহজে স্বীকার করে নিব । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার লজ্জা লাগছে না ?
-কেন লজ্জা লাগবে কেন ? তোমার লজ্জা না করলে আমার কেন লজ্জা করবে শুনি ?
নিশি তত সময়ে রেগে গেছে । চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-মানে ? কি বলতে চাও ?
-কি বলতে চাই । কয়েকদিন আগে আমি তোমাকে একটা প্রশ্ন করেছিলাম মনে আছে ?
-কোন টা ?
-তোমাকে কদিন আগে জানতে চেয়েছিলাম যে তোমার বাবা যদি আমার সাথে তোমার বিয়ে দিতে রাজি না হয় তাহলে কি করবে তুমি ? তুমি কি বলেছিলে ? বলেছিলে যে তুমি বাবা মায়ের বিরুদ্ধে যেতে পারবে না । তো মনে কর যে তোমার বাবা রাজি হল না । তখন তো চলে যাবে বিয়ে করে তোমার বাবার পছন্দের ছেলের সাথে । আর আমি কি করবো ? তোমার জন্য শোক করতে থাকবো ? দেব দাস ঘুরে বেড়াবো ?
-তাই বলে তুমি অন্য একটা মেয়ের সাথে .....?
-তুমিও তাই কর ফেলেছো ? মনস্থির করে ফেলেছো । আমাকে একটা অপশন হিসাবে নিয়ে নিয়েছো । যদি ফ্যামিলি রাজি হয় তাহলে না হলে না ! কি চমৎকার ! আর আমি অন্য মেয়ের সাথে কথাও বলতে পারবো না ? শুনো তুমি যেমন আমাকে অপশান হিসাবে নিয়েছো আর আমি নিলেই দোষ ?

নিশি কোন কথা না বলে চুপ করে তাকিয়ে রইলো । আমি বললাম
-যদি ঐ বলতে যে হ্যা যে রাজি হোক বা না হোক আমি তোমাকে ভালবাসি তোমার সাথেই জীবন পার করবো তাহলে আমি তোমাকে কোন ভাবেই অপশান হিসাবে নিতাম না । আর এতোই যখন ফ্যামিলির চিন্তার তখন আমার সাথে সম্পর্ক করাও ঠিক হয় নি । বাবা মায়ের বাধ্য মেয়ে হয়ে থাকতে ! ভাল হত না ? তোমাদের প্রেমও করতে ইচ্ছে করে আবার বাবা মায়ের বাধ্য সন্তানও হয়ে থাকতে ইচ্ছে করে । বাহ !

নিশি বলল
-আমি তোমার সাথে আর সম্পর্ক রাখবো না ।
-রেখো না । চলে যাও । যেদিন থেকে আমাকে তুমি ঐ জবাব দিয়েছো সেদিন থেকে তোমার প্রতি আমার আকর্ষন শেষ হয়ে গেছে । যার কাছে আমি অপশন সে আমার কাছে প্রায়োরিটি হতে পারে না !