শুভকে মেসেজটা পাঠাবে কিনা বেশ কয়েকবার ভাবলো পিয়া । মেসেঞ্জারে সবুজ আলোটা চমৎকার দেখা যাচ্ছে । এখনও অনলাইনে আছে । আর পিয়া ভাল করেই জানে শুভ অনলাইনেই আছে । একটু আগে সে একটা ছবি আপলোড দিয়েছে । সেটাতে শুভ লাভ রিএকশনও দিয়েছে । সত্যিই বলতে কী ছবিটা এমন ভাবে কাস্টোমাইজ করে দিয়েছে যেন কেবল শুভই ছবিটা দেখতে পারে ।
আর কিছু না ভেবে হ্যালো নক দিয়েই ফেলল । কিছু সময় অপেক্ষা । তারপরই শুভ লিখলো, হা্ই ।
-কী খবর ?
-ভাল। তোমার?
-আমারও ভাল ।
পিয়া আবারও কিছু সময় থমকালো । এখনই জিজ্ঞেস করবে কি কথাটা? জিজ্ঞেস করলে কি জবাব দেবে নাকি অন্য কিছু ভাববে।
-কিছু বলতে ?
-হুম ।
-বল ।
-একটা কথা জানার ছিল ।
-হুম । বল ।
-অনেস্ট আনসার দিবে, কেমন ?
-আচ্ছা । বল।
পিয়া একটু হাসলো মনে মনেই । যে প্রশ্নটা করতে যাচ্ছে সেটার কোন মানে হয়তো নেই । তবুও ওকে করতেই হবে ।
-আসলে আমি তোমার একটা আচরনে খানিকটা কনফিউজ হয়ে গেছি। আমি যখন ভাল ভাবে জেগে গুজে কোন ছবি আপলোড দেই তুমি সেটা দেখোই না কিংবা দেখলেও সাধারন লাইন দিয়ে চলে যাও অন্য দিকে যখন সকাল বেলা কেবল খালি মুখে কোন রকম সাজখোজ ছাড়া ছবি দেই যেগুলোতে আমাকে মোটেই সুন্দর লাগে না সেই ছবি গুলোতে লাভ রিএক্ট দাও । আমাকে ব্যঙ্গ করতে এমনটা কর ?
কিছু সময় কোন রিপ্লাই এলো না । তারপর শুভ বলল, তোমার কেন মনে হল যে কেবল ব্যঙ্গ করতে আমি লাভ রিএক্ট দেই ।
-না মানে ...
-তোমার ঐ সাজগোজ ছবি গুলোর ভেতরে তুমিই শতভাগ থাকো? সেগুলোর ভেতরে অনেক কিছু মেকি । কৃত্রিম । কিন্তু এই এলেমেলো ছবি গুলোর ভেতরে আমি সত্যি তোমাকে খুজে পাই দ্য রিয়েল ইউ যেটা আমি পছন্দ করি । লাইক তোমার লিপস্টিক বিহীন ঠোঁট, মাসকারা না কি যেন দাও চোখে ওটা ছাড়া চোখ কী মোহনীয় আর মায়াবী লাগে সেটা আমি কোন দিন ভাষার প্রকাশ করতে পারবো না ।
পিয়া কিছু সময় কোন কথা বলতে পারলো না । শুভর কাছ থেকে সে এই উত্তর কোন ভাবেই আশা করে নি । কী বলবে সেটাও সে বুঝতেই পারছে না। শুভ আবার বলল, তোমার কাছে কি এখনও মনে হচ্ছে আমি ব্যঙ্গ করতে লাভ রিএক্ট দেই ।
-না ।
-গুড ! আর কিছু জানার আছে?
-না !
-আমি কিছু কি চাইতে পারি?
-বল ।
-আমাকে একটা ছবি তুলে দাও দেখি এখন যদিও জানি একটু আগের ছবিটা কেবল আমার জন্যই পোস্ট করেছো তুমি কাস্টমাইজ করে । তবুও ইনবক্সে একটা ছবি দেখি । ঘুমানোর আগে তোমার মুখ দেখে ঘুমাতে যাই ।
পিয়ার মনের ভেতরে একটা অজানা আনন্দের বন্যা বয়ে গেল । কেন গেল সেটা ও নিজেও জানে না । তবে ঘরের আলো জ্বেলে একটা নয় বেশ কয়েকটা ছবি তুলল । তারপর সেগুলোর ভেতর থেকে একটা পাঠালো শুভ কে ।
শুভ বলল, আজকে আমার ঘুম অনেক ভাল হবে । আরেকটা অনুরোধ কি করবো?
-বল।
-সকালে যখন ঘুম থেকে উঠবে তখন একই ভাবে একটা ছবি তুলে পাঠিও । যদিও প্রতিদিন তোমার ছবি দেখেই আমার ঘুম ভাঙ্গে তবে তুমি যদি ছবি পাঠাও তাহলে সেটা আরও বেশি ভাল হবে !
এবার পিয়া অনুভব করলো ওর লজ্জা লাগছে । এই ছেলেটা ওকে এভাবে ভালোবেসে আসছে সেটা ও টেরই পায় নি । যদি এই ছবির ব্যাপারটা লক্ষ্য না করতো তাহলে হয়তো জানাও হতো না । তবে এখন তো জানা হল ।
KAMU SEDANG MEMBACA
পরমানু গল্প গুচ্ছ
Cerita Pendekমাঝে মাঝে জীবনের গল্প বলতে হাজার শব্দ লাগে না। মাত্র অল্প কয়েকটা লাইন দিয়েই বলা হয়ে যায় পুরো গল্প। পরমানু অনু গল্প গল্প গুলো এমনই। ছোট গল্পের জগতে আপনাকে স্বাগতম ।