বিকেল ৫টা বাজে, অন্ধকার একটি ঘরে গোল টেবিলের চারিপাশে বিভিন্ন মানুষ তাদের মুখ ঢেকে বসে রয়েছেন। বলা বাহুল্য, আমিও তাদের মতোই একজন গুপ্ত শ্রেনীর মানুষ। লোকমুখে কখনো তা ইলুমিনাটি, কখনো সাতোশি নাকামোতো, কখনো আবার ইলন মাস্কের আন্ডারগ্রাউন্ড সিটি। অবশ্য কোনোটাই যে আলাদা নয়, তা নিয়ে আমরা বেশ সজাগ থাকলেও আম জনতা কিছুই জানেনা। এই গুপ্ত শ্রেনীর মানুষদের যে বাইরে কোনো জগৎ নেই, বাইরের জগত সমন্ধে বক্তব্য রাখার কিংবা নিজের নাম প্রকাশের ও জায়গা নেই, এটুকুই আমাদের বাধা। নইলে বেশ ভালোই কাটে সময়, কখনো এস-কয়েন নিয়ে, কখনো শেয়ার মার্কেট নিয়ে, কখনো স্টক হোল্ডারদের নিয়ে আলোচনা করতে করতে। বাইরের জগতের হিংসা, দম্ভ, অহংকার এসব নাই বা থাকল জীবনে।
ইতিমধ্যেই আরও একজন মাস্ক পরিহিত মানুষ এসে গোল টেবিলে বসলেন। বললেন, "এস কয়েনের মার্কেট কিন্তু ডাউন হয়ে গেছে, শেয়ারেও বেশ প্রভাব পড়েছে, কিছু কি করা যায়?"
একপাশ থেকে একটি মানুষ হাতে একটা পেনড্রাইভে ডকুমেন্ট নিয়ে অন্ধকার দেওয়ালে প্রোজেক্টারের স্ক্রিনে স্লাইডশো চালালেন। পরপর অনেকগুলো গ্রাফ এর চিত্র আসল, আর শেষ গ্রাফটা যেন একেবারে মাটির সাথে মিলিয়ে গেছে। তা দেখে একজন বলল, "এস কয়েনের নামটা বদলে দিলেই হয়ত সমস্যা মিটে যাবে।" তার কথা মতো লাইভ শেয়ার মার্কেটের গ্রাফ দেখানো হল। এডিট অপশনে গিয়ে এস কয়েনের "এস" বদলে করা হল "টি" এবং "কয়েন" বদলে করা হল "মানি"- "টি-মানি"। আমি বললাম, "কাল সকালের খবর অবধি অপেক্ষা করা হোক, ততক্ষনে গ্রাফ আকাশ ছুঁয়ে ফেলবে। শুধু নোটে লেখা থাক ভ্যালু আপডেটেড।" সমস্ত কাজের শেষে সবাই উঠে গেলে একজন সমস্ত ডকুমেন্টস নিয়ে চলে গেলেন বাইরে। আমরা মাস্ক খুলে বিল্ডিং এর বাইরে বেড়িয়ে এলাম। সন্ধ্যে হয়ে অন্ধকারের নেমে এসেছে বাইরেও, "আন্ডারগ্রাউন্ড সিটি" লেখাটা অন্ধকারের মধ্যেই চকচক করছে। পাঞ্চ কার্ডটা নিয়ে যেতেই টিকটিক করে আওয়াজ করে জানান দিল যে আমি সঠিক মানুষ, স্ক্রিনের উপরে সবুজ লেখা উঠল "সাতোশি নাকামোতো ২৭"। কিছুক্ষন পর পরেরজন এসে দাড়ালো পাঞ্চ মেশিনের সামনে। পাঞ্চ কার্ডটা স্ক্যান করতেই আবার সবুজ লেখা উঠল "ইলুমিনাটি ৫"। সে আমায় বিদায় জানিয়ে ভিতরে চলে গেল, গোল টেবিলের ঘরের দিকে। আমিও বেড়িয়ে এলাম আজকের মতো কাজ শেষ করে।
-শিল্পা প্রামানিক
YOU ARE READING
~HAWAII~
FantasyStory about the island Hawaii...created with the favourite person, with love and Imagination.
