ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রায় একটা বাজতে চলেছে । এতো রাতে ছেলেটার ফোন পেয়ে একটু অবাক হল নওরিন। অফিসের কোন ইমার্জেন্সি? মনে মনে ভাবলো সে । তারপর ফোনটা রিসিভ করলো।
-হ্যালো!
-নওরিন ।
-বল । এতো রাতে ?
-তোমার সামনে বিপদ । একদল লোক আসছে তোমাকে তুলে নিয়ে যেতে !
-মানে?
-মানে বুঝিয়ে বলার সময় নেই । তুমি এখন বাসা থেকে বের হও। টাকা পয়সা যা আছে নিয়ে নাও আর পাসপোর্ট নিয়ে এসো । প্লিজ দেরি কর না । আমি ঠিক তোমার বাসার পাশের গলিতে এসেছি । দেরি কর না।
-কিন্তু মানে কি? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না । আর আমি ফোন দিচ্ছি থানাতে !
-থানাতে ফোন দিয়ে লাভ নেই । কেউ আসবে না । যে তোমাকে তুলে নিয়ে যেতে আসছে সে প্রচুর ক্ষমতার অধিকারী । আর তুমি জানো এদেশে ক্ষমতা থাকলে কি হয় । প্লিজ আমার কথাটা একটু শোন । আমাকে তো অনেক দিন ধরে চেন । আমার কথাটা শোনো প্লিজ !
নওরিন কি করবে বুঝতে পারলো না । রিয়াদকে সে আসলেই অনেক দিন ধরে চেনে । সেই ইনিভার্সিটি থেকে । যদিও খুব বেশি ঘনিষ্ঠতা ওদের ছিল না । তবে রিয়াদ পড়াশুনাতে বেশ ভাল ছিল । এই জন্য ক্লাসের সবাই ওকে চিনতো । মানুষ হিসাবে বেশ চুপচাপ থাকতো বলে কারো সাথেই খুব একটা ভাব হয় নি । পড়াশুনা শেষ করে নওরিন ওর বর্তমান অফিসে যোগ দেয় । এর বছর খানেক পর একদিন রিয়াদ একই অফিসে জয়েন করে । রিয়াদকে ওখানে জয়েন করতে দেখে নওরিন একটু অবাকই হয়েছিলো । শুনেছিলো রিয়াদ নাকি ব্যাটে চাকরি করতো । ওখান থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে এসে ওদের অফিসে জয়েন কেন করলো কে জানে । অফিসে এসেও দেখতো রিয়াদ কেবল নিজের মনে কাজ করে যাচ্ছে । কারো সাথে খুব একটা মিশতো না, আড্ডা দিতো না । কাজ ছাড়া ওদের আর কোন কথাও হত না ।
নওরিন কি করবে বুঝতে পারলো না । রিয়াদ এখনও ফোনে ওপাশেই রয়েছে । নওরিন বলল, আচ্ছা আমি নামছি । আমাকে কয়েক মিনিট সময় দাও ।
রিয়াদ বলল, দেরি করবে না । একদম না । ওরা রাস্তায় রয়েছে । জলদি ।
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।