অরিন কফির কাপে শেষ চুমুক দিল । এতো সময়ে সে একটা কথাও বলে নি । চুপ করে কেবল কফির কাপে চুমুক দিয়ে গেছে । সামনে বসা মানুষটাকে সে একটা সময় খুব বেশি অপছন্দ করতো । অবশ্য এর পেছনে যথেষ্ট কারণও ছিল । কিন্তু একটা কথা জানতে পেরে অরিনের মাথা ঘুরে গেছে । নিজের কানকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলো না । বারবার কেবল মনে হচ্ছিলো যে এখনকার যুগেও কেউ কাউকে এমন ভাবে পছন্দ করতে পারে ?
আজকে সেই ব্যাপারেই কথা বলতে এখানে এসেছে । ওদের অফিসের একেবারে টপ ফ্লোরেই একটা ক্যাফে আছে । সেখানেই বসে আছে সে ঈষামের সাথে । কফিতে চুমুক দেওয়ার সাথে সাথে ছেলেটা ওর দিকে বারবার চোখ তুলে তাকাচ্ছে । মাঝে মাঝে চোখাচোখী হয়ে যাচ্ছে ।
অরিন যেদিন থেকেই এই অফিসে যোগ দিয়েছে সেই দিন থেকেই ঈষাম ওর পেছনে লেগে আছে । হ্যা, কথাটা পেছনে লেগে থাকাই বলে । যদি দুই দিক থেকে পছন্দ হয় তাহলে ঠিক হয়ে কিন্তু ব্যাপারটা অরিনের কাছে বিরক্তির পর্যায়েই চলে গিয়েছিল । শেষে বাধ্য হয়ে সে তার ডিপার্টমেন্ট হেডের কাছে রিপোর্ট করে । তবে অরিন মনে মনে একটু ভয়ে ভয়ে ছিল । কারন ঈষাম অফিসের খুব ভাল অবস্থানেই আছে । এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। তার তুলনাতে অরিন নামে মাত্র একজন এপ্লোয়ী । তবে অরিন এবার ঠিক করেই রেখেছিলো যে সে যদি তার বস কিছু না করে তাহলে সে চাকরি ছেড়ে দিবে । এই ঝামেলা আর ভাল লাগছে না !
ঈষাম আর অরিনকে অফিসেই ডাকা হল । অরিন প্রথম থেকেই বুঝতে পারছিলো যে তার বস খানিকটা ঈষামের দিকেই টেনে কথা বলছে । অরিন জানতে ব্যাপারটা এমনই হবে । অরিন বলল, ঠিক আছে স্যার আপনি যদি কিছু না করেন তাহলে আর কি ! আমি আজই চাকরি ছেড়ে দিবো ! এই ঝামেলা আমার ভাল লাগছিলে না !
ঈষামের প্রতিক্রিয়া হল সাথে সাথেই । সে বারবারই অরিনকে সরি বলতে লাগলো । তাও আবার হাত জোর করে । এক পর্যায়ে সে নিজেই বলল, মিস অরিন আর এমনটা হবে না । তারপরেও আামি আপনার অপরাধী । আপনি চাইলে আমি আজই চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো ।
অরিন খানিকটা অবাকই হয়েছিলো । হঠাৎ এই রকম পরিবর্তন সে আশা করে নি । অরিন বলল, ঠিক আছে । এর থেকে আর আমাকে বিরক্ত করলেই আমি খুশি !
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।