-ভাই এখান থেকে লাফ দিলে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কত টুকু ?
লোকটা সিগরেট টানছিল আপন সুখে । বিকেল বেলা এই ব্রীজ টার উপরে অনেকেই আসে হাওয়া খেতে । হাওয়া খেতে খেতে কেউ কেউ ধোয়াও খায় । লোকটা আমার দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে কিছু একটা চিন্তা করলো । আমাকে দেখলো পা থেকে মাথা পর্যন্ত । আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেন আমি সদ্য কোন মানষিক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসেছি । তারপর এই ব্রীজের উপরে এসেছি ঝাপ দেওয়ার জন্য ।
কিছুটা সময় উদাস হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল
-সাঁতার জানেন ?
-জি ?
-বলতেছি সাঁতার জানেন ?
-জি জানি ।
-তাহলে মরবেন না । কিছুই হবে না ।
-যদি আমি না সাঁতরাই ?
আমি যেন খুব মজার কোন কথা বলেছি এমন একটা ভাব করে লোকটা খুব হাসলো । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-যখন নাম মুখ দিয়ে পানি ঢুকবে তখন অন্য কিছু মনে থাকবে না । বাঁচর জন্য এমনিতেই সাঁতরাবেন । তার চেয়ে বরং ঘুমের ওষধ খান ।
-ঘুমের ঔষধ ?
-হুম । সব থেকে সহজ এবং কার্যকরী উপায় ।
-কিন্তু আমাকে তো কেউ ঔষধ দিবে না, বিশেষ করে ডাক্তারের...।
-আরে কোন চিন্তা কইরেন না । আমার নিজের ফার্মেসী আছে ।
এই বলে লোকটা পকেট থেকে একটা কার্ড বের করে দিল । সময় করে চলে আসবেন আমার দোকানে । যতগুলো খুশি নিয়ে যাবেন । আপনার জন্য ১০% ছাড় । ওকে ?
লোকটা আর দাড়ালো না । আপন মনে সিগ্রেট টানতে টানতে চলে গেল । আমি এক ভাবে তাকিয়ে রইলাম নিচের বয়ে চলা নদীর টলটলা পানির দিকে । আসলেই এখানে ঝাপ দিলে মরার সম্ভানা একেবারে কম ।
খামোখা এতো দুরে এলাম মরার জন্য ।
নিশির কান্না বিজাড়িত চোখ টা এখনও আমার সামনে ভাসছে । মেয়েটা এমন করে কাঁদছিল ।
এমন করে কাঁদে ?
আর আমি কিছুই করতে পারছিলাম না । নিশির সেই কথার পরে আর কোন থাকতে পারে না । নিশির কাছে জানত চেয়েছিলাম তোমার কাছে কে প্রিয় ? তুমি কাকে চাও ?
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।