শফিক সবে মাত্র সকালের নাস্তা সেরেছে । এখনও টেবিল থেকে উঠে নি । রিমা রান্নাঘর থেকে একটা গরম দুধের গ্লাস সামনে এনে রাখলো । গ্লাসটা শফিকের মেয়ে রুমুর জন্য নয় । রুমুর সামনে আগে থেকেই একটা দুধের গ্লাস রাখা। শফিকের দিকে তাকিয়ে রিমা বলল, দুধটা শেষ কর ।
শফিক খানিকটা অসহায়ের মত স্ত্রীর দিকে তাকালো । সে দুধ খেতে পছন্দ করে না একদম । কিন্তু এই কথা রিমাকে বলা যাবে না । বললেই রেগে যাবে । এমনিতেও তার মেজাজ একটু চড়ে আছে । শফিকের কথাটা তোলাই উচিৎ হয় নি । কিন্তু না বলে থাকতেও পারে নি । আবার রিমার রাগের কারণটা শফিক খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে । তাই কিছু বলতেও পারছে না।
শফিক আর কিছু বলার সাহস করলো না । চুপচাপ দুধের ক্লাস টা খালি করলো । তারপর টিভির ঘরে চলে গেল । এখন ওর বিশেষ কাজ কর্ম নেই । যদিও এখন পুরোপুরি সুস্থ । তবে কাজ কর্ম সব বন্ধ থাকার কারণে বাসাতেই সময় কাটাতে হচ্ছে । সারাদিন বসে টিভি দেখে নয়তো বই পড়ে । রিমা ওকে ঘরের কাজে হাত দিতে দেয় না । আগে যা সাহায্য করতো এখন সে সব বন্ধ !
বাড়ির দরজাতে আবারও কড়া নাড়ার শব্দ শোনা গেল । শফিক জানে কে এসেছে । কিন্তু দরজা খুলতে সাহস হল না । রিমা দেখলে চিৎকার চেঁচামিচি করে একাকার করে দিবে ! কিন্তু কলিংবেল বাজতেই থাকলো । এক সময় শফিক দেখলো রিমা রান্না ঘর থেকে বের হয়ে এল দরজা খুলে দিল । শফিক পেছনেই ছিল ।
যাকে আশা করেছিলো সেই এসেছে । আলী চেয়ারম্যানের ছোট ছেলে ডালিম !
রিমার দিকে হাত জোর করে দাড়িয়ে আছে । ভাবী ....
-শুনো ডালিম তোমাকে আমি গতকালই বলে দিয়েছি । শফিক যাবে না !
-প্লিজ ভাবী । একটু দয়া করেন !
-দয়া ! তোমরা করেছিলে ? এতো জলদি কেন ভুলে গেলে শুনি ? খুব তো বেশি সময় হয় নি । মাত্র দেড় মাস পার হয়েছে । এর ভেতরে সব ভুলে গেলে !
রিমা কখনই মানুষের সাথে কড়া করে কথা বলে না । সব সময় নরম সুরেই পাড়া প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলে এসেছে কিন্তু মানুষের নিষ্ঠুর আচরন তাকে কঠিন করে দিয়েছে । তাই তো এতো কঠিন করে কথা বলতেও দ্বিধাবোধ করছে না ।
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।