চিংড়ি মাছের ঝোল দিয়ে ভাত মেখে মুখে নিতেই বুঝতে পারলাম কিছুটা সমস্যা হয়েছে । নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি সে নির্বিকারে মুখে খাচ্ছে । আমার দিকে তাকানোর খিয়াল নেই ।
সমস্যা টা কি ?সাধারনত যখন নিশি আমার উপর রাগ করলে তরকারীতে খুব ঝাল দিয়ে রান্না করে । আজকে যে পরিমান ঝাল সে চিংড়ি মাছে দিয়েছে, এটা নিশ্চিত যে আমার উপর সে রেগে আছে । কিন্তু কারন টা কি ?
আমি আরও কিছুটা সময় চিন্তা করলাম । নিশির রাগের কারন টা ঠিক ধরতে পারলাম না । মুখ বুঝে ভাত খেতে লাগলাম । নিশি খানিকটা আড় চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছে মাঝে মাঝে । বোঝার চেষ্টা করছে ঝাল তরাকরী খাওয়ার পরে আমার প্রতিক্রিয়া কি ?
আমি ঝাল দেওয়া তরকারী একদমই খেতে পারি না । নিশি এটা ভাল করেই জানে । এখন যদি আমি কিছু বলি তাহলে নিশি খাওয়ার টেবিলেই চিৎকার চেঁচামিচি শুরু করে দিবে, গত দিনের কোন একটা কারনে সে আমার উপর খেপে আছে এবং সেই চেপে যাওয়া কারন টা আগ্নেওগিরির সুপ্ত অগ্নিৎপাতের মত অপেক্ষা করছে ।
চুপচাপ খেয়ে উঠে পড়ার চিন্তা করলাম । এখন অশান্তি করতে ইচ্ছে করছে না । যুদ্ধে নামার আগে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে । সবার আগে জানতে হবে যুদ্ধ লাগার কারন ।
হাত ধয়ে যখন উঠে পড়লাম তখন নিশি বলল
-কি ব্যাপার শেষ করলে না ?
-পেট ভরে গেছে ।
-এই টুকু খেয়েই ।ফাজিল মাইয়া জানিস না কি কারনে সব টুকু না খেয়ে উঠে গেলাম । তারপর আবার জানতে চাস কেন ? আমি মুখের ভাব সথা সম্ভব নমনীয় রেখে বললাম
-অফিস থেকে বের হওয়ার সময় সাজিদ ভাই জোর করে একটা বার্গার খাইয়েছিল । অনেক টা পেট ভরে আছে এই জন্য ।সাজিদ ভাই সম্পর্কে নিশির এক প্রানের বান্ধরীর স্বামী । তাই মাঝে মাঝে তার দোহাই দিয়ে বাইরের খাওয়ার কিংবা আড্ডা দেওয়ার কথা বললে নিশি কিছু বলে না । আজকেও কিছু বলল না ।
চট জলদি রান্না ঘরের এসে আগে এক মুঠো চিনি মুখ দিলাম । এতোক্ষনে ঝালে আমার মুখ পুড়ে যাচ্ছিল । যখন ঝাল লাগাটা একটু ঠান্ডা হল তখনই চট করে আমার মাথায় নিশির রাগের কারন টা ধরা পড়লো ।
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।