আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়ার পর

548 19 3
                                    

মিমি আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে । ফুপিয়ে কাঁদছে । আজকে ঠিক করেই রেখেছিলাম ম্যাচ হারার পরে মিমিকে খুব করে পঁচাবো কিন্তু ওর এমন কান্না দেখে সব কিছু ভুলে গেলাম । মনে হল আর্জেন্টিনার হারাটা ঠিক হয় নি । এমন কিছু পাগলা মানুষদের জন্য হলেও আজকে তাদের জেতা দরকার ছিল ।

চারিপাশে তাকিয়ে দেখি বেশির ভাগ মানুষের অবস্থায় মিমির মত । ছেলে গুলো হয় তো মিমির মত করে কাঁদতে পারছে না তবে আশে পাশের সব মেয়ে গুলার চোখে পানি ।

কেন জানি আমার চোখেও খানিকটা পানি চলে এল । এই পানি আর্জেন্টিনা হেরে গেছে এই জন্য, নাকি আশেপাশের পরিচিত মানুষ গুলোর চোখের পানি দেখে কে জানে ।

আমি মিমির মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম

-কিছু খেয়ে নে । সেহরীর সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে ।

মিমি কোন কথার জবাব দিলো না । এক ভাবে ফুঁপিয়েই চলল ।

সন্ধ্যা থেকেই একটু টেনশনে ছিলাম কোথায় খেলা দেখবো এই নিয়ে । হলের টিভি রুমে দেখা যায় অথবা কোন বন্ধুদের বাসায় গিয়েও দেখা যায় । সবাই মিলে আড্ডা হবে সাথে মজা টাও হবে ।

তবে সব থেকে বেশি ভাল হয় কোন বিগ স্ক্রীনে খেলা দেখলে । কিন্তু বড় পর্দায় দেখলে হলে মানুষজন লাগবে । টিএসসিতে এতো ভিড়ের মাঝে একা একা বন্ধু বান্ধাববীহিন খেলা দেখে মজা নাই ।

খেলা দেখা নিয়ে দ্বিধা ভুগতেছি এমন সময় মিমির ফোন ।

-কোথায় তুই ?

-হলে । কেন ?

-একটু মেডিক্যালে আসতে পারবি ? আম্মু তোর সাথে দেখা করতে চেয়েছে ।

-এখনই ?

-হুম । আসবি ?

-আসব না কেন ? আসতেছি ।

মিমির আম্মা কদিন থেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছে । সারাটা সময় মিমি মায়ের পাশে । আমাদের সাথে ঠিক মত কথা বার্তা বলার সুযোগও পাচ্ছে না । অবশ্য এই সময়ে মিমির ঐ খানেই থাকাই উচিৎ । মা ছাড়া আর কে আছে ওর জীবনে এখন ।

মেডিক্যালে পৌছাতে প্রায় নটা বেজে গেল । গিয়ে দেখি মিমি আন্টির ক্যাবিনের বাইরে একজন নার্সের সাথে কি যেন কথা বলছে । আমাকে দেখে নার্সকে কি যেন বলে এগিয়ে এল আমার দিকে ।

বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)Where stories live. Discover now