ম্যানেজার সাব

717 24 3
                                    

-ম্যানেজার সাব, এই নেন আপনের কপি !

আমি কাস্টমারের কাছ থেকে টাকা হিসাব করে নিচ্ছিলাম তখনই কথাটা শুনতে পেলাম । তাকিয়ে দেখি হোটেলের বেয়ারা রমিজের হাতে আমার কফি খাওয়ার কাপটা দেখতে পেলাম। কাপটা ঢাকা রয়েছে । আমার বুঝতে কষ্ট হল না কাজটা কে করেছে । আমি রমিজের হাত থেকে মগটা নিলাম ।

নীলু কফি ভাল বানায় । ইদানীং প্রায়ই ওর হাতের কফি খাওয়া হয় । কফি খাওয়ার অভ্যাস আমার অনেক দিনের । তবে আমার কফি খাওয়া বলতে নেসক্যাফের থ্রি ইন ওয়ান কিনে গরম পানিতে ঢেলে দেওয়া । তবে নীলু বেশ যত্ন করেি কফি বানায় । রাতের বেলা প্রায়ই দরজাতে কড়া নড়ে । দরজা খুলতেই নীলু বলে ওঠে ওঠে, নিজের জন্য কফি বানিয়েছিলাম । এখন দেখি বেশি হয়ে গেছে । খাবেন এককাপ?

তারপর আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই নিজেই আমার ঘর থেকে কাপ নিয়ে যায় । একটু পরে কফি নিয়ে ফিরে আসে । টুকটাক গল্প করে আমার সাথে ! আমি ওর চোখে মুখে এক রকম আনন্দ দেখতে পাই । আমার নিজেরও যে ভাল লাগে না সেটা আমি বলবো না ! আমার ভাল লাগে !

আজকে ছুটির দিন । ক্যাম্পাসে যাওয়ার দরকার নেই । এমন কি টিউশনীও আজকে বন্ধ । আমার পকেটে যেহেতু খুব বেশি টাকা পয়সা থাকে না তাই ছুটির দিন গুলোতে আড্ডা ঘুরাঘুরি করাটা আমার জন্য না । আমি এই দিন গুলো ঘরে বসেই কাটিয়ে দেই । হয়তো বই পড়ে কিংবা মোবাইলে গান শুনে । আজকেও তেমনই প্লান ছিল কিন্তু সকাল বেলা এই হোটেলের ক্যাশ বাক্সে এসে বসেছি । এটা নীলুর বাবার হোটেল । আমি প্রায়ই এখান থেকেই খাওয়া দাওয়া করি ।

নীলুদের বাসাটা একতলা । মাঝে লম্বা রাস্তা । দুই পাশে অনেক গুলো রুম । প্রতিটি রুমেই একটা করে পরিবার থাকে । শহরের নিন্মবিত্তদের বাস এখানে । মোট ১২টা ঘর আছে । এর পাশেই রয়েছে রান্না ঘর এবং ওয়াশরুম। তার ভেতরে আমি থাকি একটাতে । নীলু আর নীলুর বাবা থাকে দুইটা রুম নিয়ে । বাড়ির মালিক যেহেতু ওর ওদের জন্য আলাদা রান্নাঘর এবং ওয়াশরুম । এবং কিছুদিন থেকে আমাকে এই রান্নাঘর এবং ওয়াশরুম ব্যবহার করতে দেওয়া হয় ! আমি নীলু এবং নীলুর বাবার কাছে স্পেশাল খাতির পাই ।

বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)Onde histórias criam vida. Descubra agora