শশীর মনটা বিকেল থেকে খারাপ হয়ে আছে । আজকে কত শখ করে শাড়ি পড়েছিলো । ভেবেছিলো আজকে ফয়সালের সাথে পুরো বিকেলটা কাটাবে । ক্যাম্পাসের কাঠালতলার বসে ফুচকা খাবে । কত দিন ফয়সালের সাথে ঠিকঠাক মত সময় কাটানো হয় না । ফয়সাল নিজের কাজ নিয়ে এতো ব্যস্ত থাকে যে শশী নামের যে তার একটা ভালোবাসার মানুষ আছে সেটা তার মনেই থাকে না ।
নিজেকে আবার সংশোধন করে নিলো শশী । সে ফয়সালের ঠিক ভালোবাসার মানুষ না । তার সম্ভাব্য স্ত্রী । পারিবারিক ভাবে বছর খানেক আগে শশী আর ফয়সালের বিয়ের কথা পাকা হয়েছে, আংটি বদল হয়েছে । ঠিক হয়েছে যে শশীর পড়াশুনা শেষ হলেই ওদের বিয়ে হবে । ছেলে হিসাবে ফয়সালকে তার অপছন্দ ছিল না । তার বাবা মায়ের খুব পছন্দের ছেলে । জামাই হিসাবে একটা ছেলের যে যে গুণ থাকা দরকার ফয়সালের মাঝে সে সব কিছুই ছিল, আছে । ভাল পরিবার, ভাল চাকরি, ভাল স্বভাব চরিত্র সব কিছু । কিন্তু শশীর কাছে ফয়সাল আসলে একটা রোবট টাইপের মানুষ । কিছু ছেলে থাকে না যারা কোন দিন কোন নিয়ম ভাঙ্গে না, বাবা মায়ের শান্ত বাধ্য ছেলে ফয়সাল সেই রকম ছেলে ।
প্রথম যখন ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিলো শশী নিজেকে কেবল বুঝিয়েছিলো যে সবার মাঝে সব কিছু থাকে না । থাকাটা সম্ভব না । মেনে নিতেই হবে । সে মেনেই নিয়েছিলো । তবে মাঝে মাঝে যখন ওর অন্য বান্ধবীদের প্রেমিকদের রোমান্টিকতা দেখে তখন শশীর মন খারাপ লাগে । মাঝে মাঝে কান্না চলে আসে । আজও আসছে । কী এমন হত কাজ শেষ করে ওর হলের সামনে আসলে ?
ঘন্টা খানেক যদি ওর সাথে বসে গল্প করে যেত, তাহলে কি খুব অসুবিধা হত !
কিন্তু সে বলল যে কাজ শেষ হতে দেরি হবে ! আজকে আসা হবে না !
আর কোন কথা না, কোন এপোজি না । কেবল জানিয়ে ফোনটা রেখে দিল !
শশী জানে ফয়সালের এই ব্যাপারটা মনেই থাকবে না । শশীর যে মন খারাপ হয়েছে এটা ফয়সাল ঠিক বুঝতেই পারবে না । তার কাছে মনে হবে কাজ শেষ হতে দেরি হয়েছে, এই কারণে আসা হয় নি । এটা শশী খুব ভাল করে বুঝবে এবং এটা নিয়ে মন খারাপের কিছু নেই । এমন লজিকই কাজ করে তার মনে ।
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।