ক্ষমতা দেখাতে সবাই পছন্দ করে। নিজের থেকে কম শক্তিধর মানুষকে শক্তির খেলায় নাস্তানাবুদ করতে বেশির ভাগ মানুষেরই ভাল লাগে। বশিরও সেই দলের মানুষ। তবে বশিরের ক্ষমতা খুবই সীমিত। সে নাসরিন পারভিনের ড্রাইভার হিসাবে কাজ করে। গাড়ি চালানো আর বাজার করা হচ্ছে তার কাজ। এই কাজের ভেতরে অন্যের উপর ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ খুবই সীমিত। তার দৌড় রিক্সাওয়ালা, দারোয়ান পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। হাতের ভেতরে সব সময় নিসপিস করলেও তাকে সামলে চলতে হয়।
তাই আজকে যখন নাসরিন পারভিন বললেন, সাইকেল ওয়ালাকে ধরে আনতে বশির দ্রুত দরজা খুলে বের হয়ে গেল।
গাড়ি আটকে ছিল পান্থপথের সিগনালে। এই সিগনাল সহজে ছাড়ে না। বসে থাকা ছাড়া কোন কাজ নেই। গান কিংবা রেডিও ছাড়ার কোন উপায় নেই কারন নাসরিন পারভিনের মেজাজ গরম হয়ে আছে। বাড়ির কাজের মেয়ে ফুলিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছে সে। এই কারনেই সম্ভবত তার মেজাজ গরম।
তাই যখনই বলল, এই বশির।
-জি ম্যাডাম
-ঐ সাইকেলওয়ালাকে ধরে নিয়ে আয়। বেটা সাইকেল দিয়ে বাড়ি মেরেছে গাড়িতে।
বশিরের মনে হল মেডমের কোথাও ভুল হয়েছে। কারন। সাইকেলের সাথে যদি ঢাক্কা লাগতো তাহলে সে বুঝতে পারতো। কিন্তু এই কথা এখন মেডামকে বলা যাবে না। বললেই সে চিৎকার উঠবে। আর তাছাড়া বশিরের সামনে ক্ষমতা দেখানোর একটা সুযোগ এসেছে। সবার সামনে সাইকেলওয়ালা বেটা কে কলার ধরে টেনে আনাটা একটা মজাদার ব্যাপার হবে। সেটা ভাবতেই বশিরের চোখ চকচক করে উঠলো। সে আর দেরি না করেই বের হয়ে গেল দরজা দিয়ে। ব্যাটাকে ধরতেই হবে।
রিয়াদের মনে হল এই পথে আসাটাই ভুল হয়েছে। পুরো রাস্তা জ্যাম। তাড়াহুড়ো করে পৌছানোর জন্য আজকে সাইকেল নিয়ে বের হয়েছে আর পথে সেই জ্যাম। মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। সাইকেলটা আইল্যান্ডের উপরে তুলে সে দাড়িয়ে থাকা গাড়ি গুলোর ভেতর দিয়ে রাস্তা পার হতে লাগলো। একেবারে পৌছে যাবে এমন হঠাৎ কেউ তার কলার চেপে ধরলো। রিয়াদ তাকিয়ে দেখলো একজন চুটুক দাড়িওয়ালা মানুষ তার কলার চেপে ধরেছে। বয়স তার থেকে কিছু বেশির হবে।
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।