ইরাকে আমি একেবারে শুরু থেকেই বলেছিলাম কথাটা । একেবারে শতভাব নিশ্চিত না হয়ে আমাকে যেন কোন কথা না দেয় । মানুষ যখন প্রথমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তখন আবেগের কারণে এমন অনেক কথাই দিয়ে ফেলে যা পড়ে সে আর রাখতে পারে না। কিন্তু এই রাখতে না পারার কারণে অন্য পাশে থাকা মানুষটার জীবনে একটা বড় রকমের ধাক্কা খায় । অনেকে এই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারে না । তাই ওকে বলেছিলাম আমাকে এমন কোন কথা যাতে না দেয় যে কথা সে পরে গিয়ে রাখতে পারবে না ।
সম্পর্ক শুরু পরপরই একদিন ইরা আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্নের কথা বলতো । এমনটা সবাই বলে । প্রথম প্রথম কত কথা মনে হয় । কত কিছু করতে ইচ্ছে করে । ইরার চোখেও ঠিক একই স্বপ্ন ছিল । আমার এসব দেখে ভাল লাগতো । ওকে আরও বেশি করে পছন্দ করা শুরু করলাম ।
একদিন মনে হল ওর সাথে সম্পর্কটা আরও একটু গভীরে নিয়ে যাওয়া উচিৎ । এবং এই নিয়ে যাওয়ার আগে আমার নিশ্চিত হওয়া দরকার যে মেয়েটা সত্যিই আমাকে আমার হাত ধরে রাখতে পারবে কি না ! যখন কথাটা জানতে চাইলাম তখন প্রথম বাক্যেই বলল, অবশ্যই । আমি তোমার সাথেই আমার জীবনের বাকি সময়টা কাটাতে চাই ।
আমি বললাম, এখনই চট করে জবাব দিও না । একটু ভাবো ।
-মানে !
আমার কথা শুনে যেন একটু বেজার হল ও । ভাবলো হয়তো ওর কথা আমমি বিশ্বাস করছি না । ইরার হাত ধরলাম । তারপর বললাম, জীবনে অনেক সময় অনেক কিছু আমাকে করতে হয় । তাই আমি বলছি আমাকে কথা দেওয়ার আগে একটু চিন্তা কর ভাল করে । যেমন তোমাকে আমি বিয়ে করতে চাই । পড়াশুনা শেষ করে একটা চাকরি বাকরি জোগার করে বিয়ে করতে ইচ্ছুক আমি । এখন প্রশ্ন হচ্ছে মাঝে অনেক ঝামেলা হয়ে যেতে পারে । এমন হতে পারে যে তোমার বাবা রাজি হল না বিয়ে দিতে । তখন?
-কেন রাজি হবে না । তুমি যদি একটা ভাল চাকরি পাও । কেন রাজি হবে না।
-যদি না পাই । তাহলে?
এই কথাটা শুনে ইরা যেন একটু চমকালো । একটু যেন থমকে গেল । আমি ওকে বলল, দেখো সামনে কি হবে সেটা আমরা কেউ বলতে পারি না । এমন হতে পারে যে আমার চেষ্টা সত্ত্বেও একটা ভাল কিছু আমি করতে পারলাম না । কিংবা দেরি হল । কিন্তু তোমার বাবা রাজি হলেন না বিয়ে দিতে । তখন কি করবে? আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করছি যে তোমার জীবনের সব থেকে গুরুত্ব কাকে দিবে ?
YOU ARE READING
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
Short Storyব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।