রাতের বেলা হাসপাতলে থাকতে নিকিতার ভাল লাগে । যদিও ওর বাবা ব্যাপারটা পছন্দ করেন না । বিশেষ করে এই সময়ে তার বাবা হাসপাতালে থাকেন না । এই সময়ে চাইলে একটা দুটো সিগারেট খাওয়া যায় ! আজও সিগারেট ধরিয়ে বসেছিলো ক্যান্টিনে । হাসপাতালে সিগারেট খাওয়ার কোন সুযোগ নেই । এমন কি এই ক্যান্টিনেও না । কিন্তু নিকিতার বাবা হচ্ছে এই হাসপাতালটার মালিক । নিকিতা একজন ডিরেক্টর । সে একটু নিয়ম ভাঙ্গতেই পারে । তাছাড়া এখন ক্যান্টিনে মানুষজন নেই ।
-আমি কি একটা সিগারেট ধরাতে পারি?
নিকিতা ফিরে তাকালো । একজন ২৮/২৯ বছরের যুবক তার সামনে দাড়িয়ে রয়েছে । মানুষটার চেহারা তার পরিচিত । কয়েক দিন ধরেই সে এই মানুষটাকে দেখছে ।
যুবক আবারও বলল, আমি কি একটা সিগারেট ধরাতে পারি ? যদিও নন স্মোকিং সাইন রয়েছে এখানে কিন্তু আপনি যেহেতু ধরিয়েছেন ! আপনার স্টাফ বলল যে আপনি এই হাসপাতালের মালিক । তাই আপনি পারেন, আমি পারি না । আপনার কাছে অনুমুতি নিতে এলাম ।
নিকিতা বলল, বসুন এখানে । এখানেই ধরান ! আর আমি মালিক নই । আমার বাবা মালিক । আমি এখানে কাজ করি ।
চেয়ারে বসতে বসতে যুবক বলল, ধন্যবাদ !
তারপর পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরালো । নিকিতাকে যুবকের দিকে তাকিয়ে বলল, আপনি ঠিক সিগারেট খেতে অভ্যস্ত নন । তাই না ?
-কীভাবে বুঝলেন?
-আমি যেহেতু অভ্যস্ত আমি জানি । দেখলেই বোঝা যায় !
-জ্বী ঠিক ধরেছেন । খুব বেশি সময় হয় নি ধরেছি !
-মিস্টার ইফতি, আপনি জানেন যে জীবনের সব কিছুর উপরে মানুষের হাত থাকে না । তাই না?
নিকিতা ইফতি রায়হানকে চেনে কদিন থেকে যদিও তাদের কথা হয় নি একবার । কয়েকবার কেবল দেখা হয়েছে । কেবিন নম্বর ১৭ তে ইফতি রায়হানের স্ত্রী রয়েছেন । মেয়েটি ব্লাড ক্যান্সারের লাস্ট স্টেজে রয়েছে । গত তিনমাস মেয়েটি সিঙ্গাপুরে ছিল । সেখানে সর্বাত্বক চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু কোন লাভ হয় নি । তারা বলে দিয়েছেন যে এখন আর কিছুই করার নেই । শেষ কটা দিন প্রিয়জনের আশে পাশে থাকুক । ডাক্তারদের এমনই একটা মনভাব ছিল । তাই তাকে দেশে আনা হয়েছে । এবং ওদের এই হাসপাতালে রাখা হয়েছে ।
أنت تقرأ
বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)
القصة القصيرةব্লগে গল্প লিখছি সেই ২০১১ সাল থেকে । অনেক গল্প সেখানে জমা হয়ে গেছে । সেই গল্প গুলোই আস্তে আস্তে এখানে এনে জমা করা হচ্ছে । দুইটা ভলিউম এর আগে প্রকাশ হয়েছে ।