ভ্যাট

639 20 5
                                    

যখন রমনা পার্কে পৌছালাম তখন তিনটার মত বাজে । সাড়ে তিনটার সময় নিশির সাথে দেখা করার কথা । ভাগ্য ভাল আগেই এসে পৌছেছি । দেরি হয়ে গেলে আবার নিশি বেশ চিৎকার চেঁচামিচি শুরু করে দেয় । বড্ড ঝামেলা শুরু করে দেয় ।

তবে নিশি অন্য সব দিক দিয়ে বেশ ভাল । অন্তত অন্যান্য প্রেমিকাদের তুলনায় নিশিতো অনেক বেশি ভাল । এই যে এই দুপুর বেলাতেও কি সুন্দর এই রমনা পার্কে দেখা করতে রাজি হয়ে গেছে । অন্য কেউ হলে তো কেএফসি কিংবা বিএফসি ছাড়া দেখাই করতো না । সেখানে জিনিস পত্রের দাম তো আছেই সাথে এখন সেখানে ঢুকতে সরকারী ভ্যাট দেওয়া লাগে । উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য সরকারি ভ্যাট ।

অবশ্য রমনা পার্কেও ঢুকতে ভ্যাট দেওয়া লাগে । তবে সেটা টাকার পরিমানে অনেক কম । আর আজকাল কোথায় ভ্যাট লাগে না বল । সব জায়গায় ভ্যাট । আরে দেশের উন্নয়নের জন্য আমরা জনগন টাকা দেব না তো কে দিবে ।

এই মোহাম্মাদ পুর থেকে শাহবাগ থেকে বাসে করে এলাম এখানে ভ্যাটের টাকা টা টিকিটের সাথে কেটে রেখেছে । তার আর তারপর শাহবাগ থেকে এখানে হেটে এলাম এইটুকু রাস্তা হাটার জন্য ভ্যাট দিতে হয়েছে মাত্র ১০ টাকা ।

১০ টাকা কোন টাকা হল ?

এবং যাতে এই ভ্যাট নেওয়াটা স্বচ্ছ হয় এই জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে স্বয়ংকৃত রোবট স্থাপন করা হয়েছে । এরা দেখতে মানুষের মতই তবে কাজ কারবার বেশ পরিস্কার ।

আগে তো শুনতাম কেবল সেতু কিংবা ফ্লাইওভারে উঠতেই টোল  দেওয়া লাগতো । তাও আবার কেবল বড় বড় গাড়ি গুলোতে । তখন দেশের এতো উন্নয়নমূকল কাজের জন্য টাকা আসতো কোথা থেকে কে জানে ?

তবে সেটা অনেক আগের কথা । সেই ২০১৪র কথা । এখন ২০৩০ । দিন বদলিয়েছে ।

আমি রমনা পার্কের গেটের কাছে হেটে গেলাম । এই সময়টাতে ভিড় বেশ কম । দেখলাম গেটের কাছে ভ্যাট গ্রহনকারী রোবট দাড়িয়ে রয়েছে । আমি কাছে আসতেই বোরট বলে উঠলো

-সুস্বগতম মিস্টার অপু তানভীর ।

একটু চমকে উঠলাম । কিন্তু পরক্ষনেই নিজেকে সামনে নিলাম । আসলে নতুন এই প্রযুক্তি চালু হয়েছ তো যাতে সবার চোখের ছবি ন্যাশনাল ডাটাবেজে সেট করা থাকে । এবং এই রোবট গুলোর ব্রেন বা কপ্ট্রোন তো সেই মেইন ডাটাবেজের সাথে সংযুক্ত থাকে । সুতরাং এরা যে কারো নাম পরিচয়ই জেনে যেতে পারে মুহুর্তেই । ১০ বছর আগেও এমন ছিল না । এখন হয়ে গেছে । দেশে উন্নয়ন হচ্ছে । এটা তারই প্রমান ।

বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০৩)Where stories live. Discover now