১.
-"হেই সুইট ডার্লিং, কাম অন। তন্ময় নেই তাতে কি বেবি? আমিতো আছি। লেটস এনজয়।"
লোকটার বিশাল থাবা এগিয়ে এলো মিশুর দিকে। ভয়ংকর দুটো চোখ এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন কোটর থেকে বেড়িয়ে আসতে চাইছে চোখ দুটো। মিশুর গলা শুকিয়ে কাঠ। বুকের ভেতর দ্রিম দ্রিম করে হাতুরি পিটতে লাগলো। নিজের ভূলেই নিজে ফেঁসে গেছে। লোকটা বিদঘুটে হাসি হাসতে হাসতে এগিয়ে এলো কাছে। মিশু ভয়ে লোক বন্ধ করে ফেললো। লোকটা মিশুর মাথার পিছন দিকে একহাত দিয়ে শক্ত করে মাথাটা ধরে কাছে টেনে নিলো। মিশুর খুব চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। বাকশক্তি বন্ধ হয়ে গেছে বোধকরি। লোকটা মিশুকে দুহাতে জাপটে ধরে বিছানার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। শয়তানটার বিশাল দেহের নিচে পড়ে মিশুর ছোট্ট শরীরটা কেবলই একটু মুক্তির জন্য হাসফাস করছে। আর মনেমনে প্রার্থনা করছে, "হে আল্লাহ আমায় রক্ষা করো। আমায় রক্ষা করো মাবুদ।"
মিশু গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে লোকটাকে ছাড়াতে চেষ্টা করছে কিন্তু পেরে উঠছে না। ক্রমশই ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। লোকটা শরীরের এখানে সেখানে হাত দিচ্ছে আর কি বিশ্রী সেই আচড়, মিশুর শুধু মনেহচ্ছে আগামীকাল পত্রিকায় বুঝি ওর প্রাণহীন নিথর দেহের একটা ছবি বের হবে। আচ্ছা,আব্বু খুব কষ্ট পাবেনা ছবিটা দেখে? আব্বুর কত স্বপ্ন ওকে নিয়ে,সব এই একটা রাতের মাত্র এক ঘন্টার ব্যবধানে ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে? মিশু সুইসাইড করলে বাবার স্বপ্ন পূরণ করবে কে? বাবার কথা মনে হতেই একটা অন্যরকম মনোবল পেয়ে গেলো সে। গায়ের জোরে দাঁত বসিয়ে একটা কামড় দিলো হিংস্র লোকটার কাঁধের উপর। কামড়ের চোটে একটু সরে যেতেই উঠে দাঁড়ালো মিশু।
কিন্তু পালাতে পারলো না। লোকটা আবারো লম্বা হাতটা বাড়িয়ে ধরে ফেললো ওকে। একহাতে মিশুর গলাটা টিপে ধরে কাছে টেনে নিলো। এই মুহুর্তে আর কিছুই ভাবতে পারছে না মেয়েটা। এখানে কেউ ওকে বাঁচাতে আসবে না, নিজেকেই বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। মনোবল হারালে চলবে না। মিশু ভয়ংকর দৃষ্টিতে তাকালো লোকটার দিকে, ওর চোখে আগুন ঝরতে লাগলো। গাল, মুখ শক্ত হয়ে উঠলো নিমেষেই। লোকটা ওর গলা টিপে ধরে আছে,মিশু ওর সামনে দাঁড়িয়ে ডান পা তুলে সোজা লোকটার পুরুষাঙ্গ বরাবর একটা লাথি দিয়ে বসলো। জায়গামত আক্রমণ করেছে একেবারে। শয়তান লোকটা ওখানে দুইহাতে চেপে ধরে মেঝেতে বসে পড়লো। মুখটা বিকৃত হয়ে গেছে, এক ধরণের গোঙানির শব্দ বের হচ্ছে মুখ দিয়ে। মিশুর ইচ্ছে করলো শুয়োর টাকে পারলে খুন করে ফেলতে। কিন্তু রিস্ক নেয়া যাবেনা, খুন করার সাধ্য ওর নেই। এখন দ্রুত পালিয়ে যেতে হবে এখান থেকে। দ্রুত, একটা সেকেন্ড ও দেরি করলে চলবে না। মিশু একটু এগিয়ে এসে হাতের কনুই দিয়ে গায়ের জোরে মারলো লোকটার মাথার উপর। পশুটার আর ওঠার শক্তি নেই। মিশু বড় আঘাত দিয়ে ফেলেছে মগজ বরাবর।
দরজা একটানে খুলে কোনোদিকে না তাকিয়ে ছুটতে শুরু করলো মেয়েটা। যত দ্রুত পারে ওকে পালাতে হবে,এই বাড়ির বাইরে গেলে অনেকটাই বিপদমুক্ত সে। শুধু মনেহচ্ছে পায়ে একটুও জোর নেই। স্বপ্নে দৌড়ালে যেমন রাস্তা একটুও এগোয় না,এখনো সেরকম মনেহচ্ছে। তবুও বারবার আব্বুর স্বপ্নের কথা ভেবে মনের শক্তি বাড়িয়ে নিতে লাগলো। সিঁড়ি দিয়ে ছুটে সাত তলা থেকে নিচে নেমেও কোথাও একদণ্ড দাঁড়ালো না। ছুটতেই থাকলো, কোনদিকে ছুটে কোথায় যাচ্ছে তা সে জানেনা, শুধু একটাই চিন্তা এখান থেকে পালাতে হবে। পায়ে যেন এতটুকুও জোর নেই, কেবল মনের জোরেই ছুটে চলেছে মেয়েটা।
Please vote if you like it <3
YOU ARE READING
হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)
Adventureমিশু উত্তেজনায় কাঁপছে। কত সুন্দর জীবন দর্শন মেঘালয়ের। সত্যিই নতুন ভাবে নিজেকে আবিষ্কার করতে ইচ্ছে করছে ওর। আসলেই জীবনটা অনেক বেশি সুন্দর। এইযে কত সুন্দর জোৎস্না, চারিদিকে চাঁদের স্নিগ্ধ আলো! রাস্তার দুধারে গাছের সাড়ি, কত সুন্দর সবকিছু! চুল উড়ছে, মনট...