12

1.2K 48 1
                                    

১২.

রাত নেমেছে।

কুয়াশার আবরণে ধোয়াটে দেখাচ্ছে সবকিছু। নদীর জলে ভেসে চলেছে ছোট্ট ডিঙি নৌকা। যেদিকে চোখ যাচ্ছে শুধু ধূ ধূ করছে জল। জল থেকে ধোয়া উঠছে৷ শীতের রাতের মোহময় পরিবেশের সারহে যুক্ত হয়েছে চাঁদের অপূর্ব আলো। মেঘালয় ও মিশু ভেসে চলেছে নদীর বুকে।

নৌকার উপর দুজন দুদিকে শুয়ে আছে৷ মাথার উপর পূর্ণিমার চাঁদ। চাঁদের আলো কুয়াশার চাদর ভেদ করে সরাসরি গায়ের উপর এসে পড়েছে৷ সুখে মরে যেতে ইচ্ছে করছে মিশুর৷

ও আনন্দের চোটে কথাই বলতে পারছে না। হাঁফাতে হাঁফাতে বললো,'ইস! এত্ত সুন্দর কেন সবকিছু? এত ভালো লাগলে তো আমি আনন্দে কান্না করে ফেলবো।'

মিশুর কণ্ঠে এরকম বাচ্চাদের মত কথা শুনে হাসি পেলো মেঘালয়ের। হেসে বললো, 'নদীর জলে লাফাতে ইচ্ছে করছে না?'

- 'হ্যা একদম। কিন্তু জল তো একদম পানির মত ঠান্ডা হয়ে আছে।'

- 'পানির মত ঠান্ডা? হা হা হা। বরফের মত হিম শীতল।'

- 'বাহ! দারুণ উপমা দিয়েছেন তো।'

- 'আরেকটা দারুণ উপমা দেই?'

- 'অবশ্যই, দিন। শুনি?'

মেঘালয় বললো,'তোমাকে এখন চাঁদের আলোর মত স্নিগ্ধ লাগছে।'

লজ্জা পেয়ে লাজরাঙা হয়ে উঠলো মিশু৷ মুখটা ঘুরিয়ে তাকালো জলের দিকে৷ নৌকাটা স্রোতের টানেই ভেসে চলেছে৷ স্রোতে ধাক্কা খেয়ে অন্যরকম যে শব্দটা উৎপন্ন হচ্ছে, সে শব্দটাই কানে বাজতে থাকে অনেক্ষণ। নৌকা দুলছে, চাঁদ ও দুলছে৷ সেইসাথে পুরো প্রকৃতিই যেন আজ উল্লাসে মেতেছে৷ লাজুক লতার মত মিটিমিটি করতে লাগলো মিশুর চোখের পাপড়ি।

মেঘালয় জিজ্ঞেস করলো, 'তুমি ক্ষ্যাতমার্কা মেয়ে কথাটা যে বলেছে সে কেমন কোয়ালিটির মানুষ?'

মিশু চমকে উঠলো প্রশ্ন শুনে। নৌকার উপর উঠে বসতে বসতে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। তারপর বললো,'ও অনেক স্মার্ট।'

মেঘালয় অবজ্ঞার সুরে হেসে বললো, 'বয় ফ্রেন্ডের নামে ভালো বলেছো। কিন্তু তোমাকে ওভাবে অপমান করাটা নিশ্চয়ই স্মার্টনেসের অংশের মধ্যে পড়েনা?'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Donde viven las historias. Descúbrelo ahora