41

1.1K 42 0
                                    

৪১

আকাশ আহমেদ ব্যক্তিগত ভাবে মিশুর সাথে কথা বলতে চাইলেন। কথাটা শুনেই হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে মিশুর। শ্বশুরমশাইয়ের সাথে এখনো একবারও কথা হয়নি ওর। কি যে বলবেন ধারণা করা যাচ্ছেনা।

মানুষটা অনেক গম্ভীর হয়ে আছেন। সবাই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলে মিশু ওনার বেডের কাছাকাছি এগিয়ে আসলো। মেঘালয়ও মিশুর পাশে এসে দাঁড়ালো। আকাশ আহমেদ ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'তোকে কি আলাদা করে যেতে বলবো?'

মেঘালয় মিশুর আরো কাছাকাছি এসে বললো, 'আমি সবসময় এই মেয়েটার পাশে থাকতে চাই। তুমি কি বলবে জানিনা, কিন্তু যাই বলবে দুজনকেই বলো। কারণ আমরা অপরাধী হলে দুজনেরই সমান অপরাধ।'

বাবা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন, 'দুদিনেই এত প্রেম?'

- 'প্রেম তো বটেই। প্রেমের চেয়েও বড় আমার দায়িত্ববোধ। মেয়েটার এখানে কেউ নেই আমি ছাড়া। আমি ওকে এনেছি, আমিই ওর সবকিছুতে থাকবো।'

বাবা হেসে ফেলে বললেন, 'যাক। ছেলেটা মানুষ হলো তবে? যেখানে আজকালকার ছেলেরা মাইয়া রে মাইয়া রে তুই অপরাধী গান গায়। হা হা হা।'

বাবাকে হাসতে দেখে চমকে উঠলো মিশু। মিশু ও মেঘালয় একে অপরের দিকে তাকালো অবাক হয়ে। বাবা হেসেছে! তারমানে কাম হোয়াগা। মেঘালয় মিশুর দিকে তাকিয়ে চোখ মারলো। মিশু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কপালে সুক্ষ্ম ভাঁজ ফেলে তাকালো।

মেঘালয় বললো, 'কি বলতে চাও আব্বু?'

- 'যা বলার তুই তো বলেই দিলি। আমি আর কি বলবো?'

- 'তোমার কি নেগেটিভ কিছু বলার ইচ্ছে ছিলো?'

- 'তা নয়। আমি জানতে চাই এই বাচ্চার এইম কি? এখনি কি সংসার শুরু করতে চায়?'

মিশু একবার মেঘালয়ের দিকে তাকালো। প্রশ্নের অর্থ বুঝতে না পেরে অবাক হয়েই চেয়ে রইলো। আকাশ আহমেদ বললেন, 'ব্যাপারটা যেহেতু এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে কাজেই বিয়েটা ধুমধাম করেই আয়োজন করা উচিৎ। কিন্তু ওর তো এখনো কৈশোরই কাটেনি, এত তাড়াতাড়ি কি সংসারে মন বসবে? যেকোনো মেয়ের জন্যই অন্তত বাইশ বছর বয়স পর্যন্ত তাকে নিজের মত থাকতে দেয়া উচিৎ। জগতের বড় বড় বিস্ময়গুলো দেখে ফেলা উচিৎ। তারপর না সংসার। সুখী হওয়ার গোপন রহস্য হচ্ছে জগতের সব বড় বড় বিস্ময় দেখে ফেলা।'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now