77

1.1K 34 0
                                    

৭৭
ইন্ডিয়া হাইকমিশনার অফিসে সাক্ষাতের জন্য এসেছে মিশু। সাথে বর্ষা আহমেদ ও এসেছেন। হাইকমিশনারের সাথে কথা বলার সময় মিশু'র ইংরেজির দক্ষতা দেখে অবাক হলেন বর্ষা আহমেদ। মিশু সবসময় প্রমিত বাংলা ভাষায় কথা বলে। যেখানে বর্ষা আহমেদ নিজেও মাঝেমাঝে বাংলিশ করে ফেলেন। ওনার কথায় বাংলা ইংরেজি দুটোই বেরিয়ে আসে। সেখানে মিশু সবসময় শুদ্ধ বাংলায় কথা বলেও এত সুন্দর ইংরেজিতে কথা বলতে পারবে সেটা মুগ্ধ হওয়ার মতই। তাছাড়া মেয়েটা গ্রামে বড় হয়েছে। ওরকম প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মেয়ে হয়েও এত সুন্দর ইংরেজি বলতে পারাটাও এক ধরণের প্রতিভা বলা যায়। মিশু প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলো হেসে হেসে আর যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সাথে। একবার ওর রসিকতা দেখে হাইকমিশনার সাহেব হেসে ফেললেন। দেশের বাইরে কেন পড়তে যাওয়ার ইচ্ছে সেটার জবাবে মিশু বললো, 'গবেষণার বিশাল সুযোগ পাবে বলে।'

হাইকমিশনার সাহেব মিশুকে যখন বলতে বললেন ওর নিজের কিছু জানার আছে কিনা। মিশু তখন এমন একটা প্রশ্ন করলো যে টেবিলে বসে থাকা কেউই অনেক্ষণ কথা বলতে পারলেন না।

মিশু বললো, 'আমাদের দেশে বর্তমানে একটা নিয়ম চলছে যে, বাইরে বের হলেই তোকে ধর্ষণ করবো। কোনো মেয়ে ঘরের বাইরে গেলে সুস্থ শরীরে ঘরে ফিরে আসতে পারবে কিনা সেটার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। এখন বাইরে বের হতে ভয় পাই। আচ্ছা, বিদেশেও কি এমন ভয় নিয়ে বাইরে বের হতে হবে?'

বর্ষা আহমেদ অবাক হয়ে মিশু'র দিকে তাকালেন। হাইকমিশনার সাহেব কিছুক্ষণ মিশু'র দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে রইলেন। কোনো কথা বলতে পারলেন না। একজন ফরেইন হাইকমিশনারের সামনে বসে এরকম প্রশ্ন করতে প্রবল সাহস দরকার। আর মেয়েটার সেটা আছে বলেই মনেহচ্ছে।
মিশু উত্তর না পেয়ে ইংরেজিতেই বললো, 'এরকম প্রশ্ন করার আমি দুঃখিত। আসলে এতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি যে, প্রশ্নটা না করে পারলাম না।'
- 'ঠিক আছে। তোমার প্রশ্ন শুনে আমারও কিছুক্ষণের জন্য খারাপ লেগেছে। অন্যান্য দেশে মেয়েদের নিরাপত্তা অনেক বেশি। কিন্তু তুমি ইন্ডিয়ায় এপ্লাই করেছো কেন?'
- 'আমার IELTS করা নেই। ইংরেজির যেটুকু দক্ষতা অর্জন করেছি, পুরোটাই আমার নিজস্ব প্রচেষ্টায়। তাছাড়া আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগ্রহ প্রকাশ করেছি সেগুলো সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র। বাঙালি সংস্কৃতিকে আমি ভালোবাসি, সে কারণেই।'
- 'দেশপ্রেমী?'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now