44

1K 35 0
                                    

৪৪

হঠাৎ করেই বাবা মায়ের মৃত্যুটাকে মেনে নিতে পারছে না তন্ময়। মিশুকে যেদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলো, সেদিন রাতেই বাবা মা ঢাকায় ফিরছিলেন। পথে রোড এক্সিডেন্টে দুজনের মৃত্যু। তিন/চারদিন প্রচণ্ড মানসিক ডিপ্রেশনে ভুগছিলো তন্ময়। নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছিলো ওর। মিশুর সাথে প্রতারণা করার ফলশ্রুতিতে বাবা মাকে হারিয়েছে সেটাই ভেবে ভেবে অনুশোচনায়নায় দগ্ধ হচ্ছে। এর জন্য মিশুর পায়ে ধরে হলেও মাফ চাইতে হবে। বাবা মা ছাড়া পুরো জগতটাই অন্ধকার হয়ে গেছে, এখন মিশুকে খুব প্রয়োজন। এই কয়েকদিন মিশুকে ভেতর থেকে অনুভব করেছে তন্ময়। অনুতপ্ত হতে হতে নিজেকে শেষ করে ফেলেছে। মিশুর সাথে দেখা করতেই হবে।

বিছানায় শুয়ে শুয়ে মিশুর নিষ্পাপ মুখটা মনে করার চেষ্টা করছে ও। মেয়েটার ছোট্ট একটা মুখ, খাড়া নাক, শীতল একটা ভাব আছে চেহারায়। অনেক মায়া মিশে আছে সেই ছোট্ট মুখে। চোখের দিকে তাকালে অন্যরকম মায়া অনুভূত হয়। সেই মেয়েটাকে কেন ফিরিয়ে দিয়েছিলো ও? নিজের কাছে নিজেকেই আজ ছোট ছোট লাগছে। মিশুকে দেখার জন্য প্রচণ্ড ছটফট লাগছে ওর। মিশুর নাম্বার বন্ধ, মিশুর মায়ের নাম্বারে কল দিলে ব্যস্ত বলে। নাম্বার ব্লাকলিস্টে রাখা। মেসেজ পাঠিয়েও কোনো লাভ হচ্ছেনা। মিশুর বাবার নাম্বারে কল দিলে কেউ রিসিভ করেনা। এখন একমাত্র উপায় সরাসরি মিশুর বাসায় চলে যাওয়া। ফেসবুকে অনেক মেসেজ পাঠিয়েছে কিন্তু সিন হচ্ছেনা। অনেক দিন যাবত মিশু অনলাইনে আসেনা। মেয়েটা ঠিক আছে তো? ভেবে ভেবে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে তন্ময়ের। নিজের প্রতারণার জন্য নিজেকেই মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে ওর। মনেমনে ভেবে রাখলো যেভাবেই পারে আগামীকাল মিশুর বাসায় গিয়ে হাজির হবে ও। সকালের বাসেই রওনা দেবে। মিশুর সাথে দেখা করতেই হবে। মেয়েটা যেন ঠিক থাকে সেটাই মনেমনে প্রার্থনা করতে লাগলো।

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now