72

1.2K 48 2
                                    

৭২
দুদিন পর

অবশেষে আজ সেই কাংখিত বিয়ের দিন। বহুল ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে শেষ অব্দি বিয়ের প্রোগ্রামটা হচ্ছে। সেদিন রাতে তন্ময় আর কোনো ঝামেলা করেনি। সারারাত ফোনালাপ করেই কাটিয়ে দিয়েছিলো মেঘ মিশু।

আজ বরযাত্রী'রা সকালেই রওনা দিয়েছে। একটা গাড়িতে মেঘালয় আর ওর বন্ধুরা, আর বাকি গাড়িগুলোতে বাবা মা ও নিকটাত্মীয় স্বজনরা। গাড়িতে ওঠার পর থেকেই মেঘালয়ের বন্ধুরা গান জুরে দিয়েছে। মাঝেমাঝে সবাই মিলে তুমুল হাসিঠাট্টাও চলছে। মেঘালয় অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে মিশুকে দেখার জন্য। আজকের রাতটা ওর জীবনের একটা শ্রেষ্ঠ রাত হবে।

সারাদিন শেষে সন্ধ্যায় বরযাত্রীরা এসে পৌঁছলো বিয়েবাড়িতে। 'বর এসেছে' শব্দটা শোনামাত্র মিশু'র পুরো শরীর কাঁপতে শুরু করেছে। এতগুলো দিন একসাথে কাটিয়ে আসার পরও আজকের দিনটাকে অনেক বেশি স্পেশাল মনেহচ্ছে।

বরকে বরণ করার সময় মিশুর ছোট বোন ও বান্ধবীদের সাথে মেঘালয়ের বন্ধুদের বেশ যুক্তি তর্ক হয়ে গেলো। গেটের টাকা নিয়ে, মিষ্টি খাওয়ানো, জুতা চুরি সবকিছু মিলে বিয়ের আনন্দটা পরিপূর্ণতা পেয়েছে যেন। মিশু ভাবছিল, সেদিন রাতে তন্ময় কোনো ঝামেলা বাঁধালে আজকের দিনটা আর দেখা হতো না। সবার এই হাসিমুখ টাও আর থাকতো না।

মেঘালয় কিছুক্ষণ বসে থাকার পর অস্থির হয়ে উঠলো। এখনো মিশু'র মুখ দেখা হয়নি, ব্যাপারটা কি মেনে নেয়া যায়? কিন্তু বিয়েবাড়িতে এত এত লোকে গিজগিজ করছে যেন মেলা বসেছে। এতগুলো লোকের সামনে কিছু বলাও যাবে না, আর উঠে চলে যাওয়াও যাবে না। ও মনেমনে প্রতিজ্ঞা করলো একেবারে বাসর ঘরে ঢুকেই আজ বউয়ের মুখ দেখবে, তার আগে নয়।

অতঃপর মেঘালয়ের বাবা মা ও আত্মীয় স্বজনের সামনে আরেকবার বিয়ে পড়ানো হলো। মিশুকে মেঘালয়ের পাশে বসিয়ে রাখা হলো টানা তিন ঘন্টা। সবাই মিলে একসাথে খাওয়াদাওয়া, ফটোশুট, সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় সহ সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো। মিশু একবার মেঘালয়ের পাঞ্জাবি খামচে ধরে বললো, 'আমার দিকে তাকাচ্ছো না কেন?'
- 'বাসর ঘরে ঢুকে ঘোমটা তুলে দেখবো বলে।'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now