৪৯
সারারাত খুব ভালো ঘুম হলো মিশুর। রাতে কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। শেষরাতে হঠাৎ কারো হাতের উষ্ণ স্পর্শে ঘুমটা ভেঙে গেলো। কোলবালিশটা কত্ত ভালো, মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এরকম কোলবালিশ সবসময় দরকার। মিশু দুহাতে শক্ত করে জাপটে ধরলো বালিশটাকে। কোলবালিশও তার একহাতে চুলে হাত বুলাতে বুলাতে অন্যহাতে জড়িয়ে ধরলো মিশুকে। বাহ, কোলবালিশ জড়িয়ে ধরতে শিখেছে! মিশু দুহাতে জাপটে ধরতে ধরতে গাঢ় ঘুমে তলিয়ে যাচ্ছিলো। এমন সময় কপালে আলতো চুমুর স্পর্শ পেয়ে আচমকা ঘুম পালিয়ে গেলো। কোলবালিশ চুমু খেতেও শিখে গেছে! কিভাবে সম্ভব?
চোখ মেলে তাকালো মিশু। মেঘালয়কে দেখে চোখ দুটো বড়বড় হয়ে গেলো ওর। খুব কাছ থেকে মেঘালয়কে তাকিয়ে থাকতে দেখে রীতিমত হা হয়ে গেলো। মেঘালয় এসেছে! এটা স্বপ্ন নয়তো?
মিশুর নিজের নখে নিজেই কামড় দিয়ে লাফিয়ে উঠলো। ব্যথা পেয়েছে। তারমানে স্বপ্ন নয়। মিশু চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানার উপর উঠে বসলো। অনেকটা থ মেরে তাকিয়ে রইলো মেঘালয়ের দিকে। কিন্তু মেঘালয়কে গতকাল ই ঢাকায় রেখে এসেছে ও। তবে সে কিভাবে এসে হাজির হলো!
মেঘালয় হাসতে হাসতে ভ্রু দুটো নাচিয়ে বললো, 'সারপ্রাইজড?'
- 'আপনি! কোথ থেকে এলেন?'
- 'ঢাকা থেকে।'
- 'এত রাতে! আপনি রওনা দিয়েছেন কখন?'
- 'মিতু ফোন দিয়ে বললো তন্ময় এসেছে। তোমাকে ফোনে পাচ্ছিলাম না। আমার বউকে কেউ তুলে নিয়ে যাবে আর আমি বসে বসে দেখবো?'
মজা পেলো মিশু। মেঘালয়ের চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দেখাচ্ছে ওকে। চোখ দুটো ফুলে আছে। একদিনেই এই অবস্থা? মনেমনে বললো, 'এত টান! আমিও ডাকলাম আর তুমিও চলে এলে।' কিন্তু মুখে বলল, 'আপনি তো আমাকে এখনও ভালোই বাসতে পারেননি। এত কষ্ট করে আসার কি দরকার ছিলো?'
মেঘালয় বললো, 'না আসলেই বুঝি খুশি হতে?'
মেঘালয়ের গলার স্বরে এক ধরণের রাগ মিশে আছে। বেশ মজা লাগছে মিশুর। ওকে আরেকটু জ্বালানোর জন্য বললো, 'তা জানিনা। কিন্তু কে আমাকে বেশি ভালোবাসে সেটা বুঝতে সুবিধা হতো।'

YOU ARE READING
হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)
Adventureমিশু উত্তেজনায় কাঁপছে। কত সুন্দর জীবন দর্শন মেঘালয়ের। সত্যিই নতুন ভাবে নিজেকে আবিষ্কার করতে ইচ্ছে করছে ওর। আসলেই জীবনটা অনেক বেশি সুন্দর। এইযে কত সুন্দর জোৎস্না, চারিদিকে চাঁদের স্নিগ্ধ আলো! রাস্তার দুধারে গাছের সাড়ি, কত সুন্দর সবকিছু! চুল উড়ছে, মনট...