7

1.3K 36 0
                                    

৭.

মেঘালয় সরে যেতেই মিশু গিয়ে বস্তার উপর শুয়ে পড়লো। শুয়ে শুয়ে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে লাগলো। ট্রাকের দুলুনির সাথে সাথে চাঁদ টাও দুলছে সেরকম মনেহচ্ছে। শিরশিরে বাতাসে হিম হয়ে যাচ্ছে শরীর। মেঘালয় নিজের গায়ের কোটটা খুলে মিশুর দিকে এগিয়ে দিলো।

মিশু অবাক হয়ে বললো, "থ্যাংকস। কিন্তু এটার দরকার নেই। আমার সেরকম শীত করছে না।"

-"শীত না করলেও কোটটা পড়ে নাও। নয়ত ঠাণ্ডা লেগে যাবে।"

-"উহু, লাগবে না। আমার গায়ে চাদর আছে।"

মেঘালয় বললো, এই পাতলা চাদরে শীত কমবে না ম্যাম। আপনি কোটটা পড়ুন আর চাদরটা মাথার উপর বেধে ফেলুন। কানে বাতাস লাগাবেন না। ঠাণ্ডা লেগে গেলে আগামীকাল রাতে আর নদীতে ভেসে জোৎস্না বিলাস করতে পারবেন না। বুঝেছেন?"

মিশু মুচকি হেসে জবাব দিলো, "বুঝেছি। আপনার শীত লাগবে না?"

-"আমার শীত সয়ে যাওয়ার অভ্যেস আছে।"

কথাটা বলে মেঘালয় গা থেকে কোটটা খুলে দিলো মিশুকে। মিশু কোটটা পড়ে মাথার উপর চাদর ঢেকে নিলো। কেবলই মনে হতে লাগলো একটা অন্যরকম স্পর্শের সন্ধান পেয়েছে সে। মেঘালয়ের কোটটা গায়ে জড়ানোর পর তার উষ্ণতা ছড়িয়ে যাচ্ছে শরীরে। মিষ্টি সুগন্ধ এই কোট টায়, মিশু বারবার ঘ্রাণ নিতে লাগলো সেটার।

মেঘালয় বস্তার উপর দুইপা তুলে বসলো। বললো, "বাসায় কথা বলবে না?"

-"এত রাতে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করবো না। বাসায় জানে আমি বান্ধবীর বাসায় আছি। বান্ধবীর বাসা থেকে ঢাকায় এসেছিলাম। বাড়ি গেলে ওরা ভাব্বে বান্ধবীর বাড়ি থেকেই ফিরলাম।"

-"বাহ! কি ট্যালেন্ট। মেয়েদের এই একটা স্বভাব, সবসময় বয় ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময় বান্ধবীর বাড়ির নাম করে যায়।"

মিশু হেসে ফেললো কথাটা শুনে। বললো, "আমি কক্ষনো মিথ্যে বলিনি আম্মু আব্বুকে। এবার ই প্রথম। তন্ময়ের জন্য মিথ্যে বলে বাসা থেকে বের হতে হয়েছে। ঢাকা যাবো বললে কখনোই যেতে দিতো না আমাকে।"

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now