10

1.2K 52 0
                                    

১০.

- 'আচ্ছা, গাইয়া হওয়াটা কি কোনো বড় খুঁত?'

প্রশ্ন শুনে চমকালো মেঘালয়। মিশু উন্মুখ হয়ে মেঘালয়ের দিকে চেয়ে আছে আর করুণ গলায় প্রশ্ন করছে ওকে। মেঘালয় ভ্রু কুঁচকালে মিশু আবারও বললো, 'একটা মেয়ে গ্রামে জন্মেছে সেটা কি কখনো অপরাধ হতে পারে? সাধারণভাবেই গ্রামে জন্মানো মেয়েরা একটু কম স্টাইলিশ হয়ে থাকে৷ শহরের মেয়েরা তুলনামূলক বেশি স্টাইলিশ। এর জন্য কোনো মেয়েকে কেন অপমানিত হতে হবে? মেয়েটির কি নিজের জন্মের পেছনে কোনো হাত ছিলো?'

মেঘালয় একটু মাথাটা ঝাঁকিয়ে জবাব দিলো, 'ঠিক কি হয়েছিলো বলোতো? কিরকম অপমান?'

মিশু বলতে শুরু করলো,

তন্ময়ের সাথে পরিচয়টা হয়েছিলো ফেসবুকেই। এরপর ধীরেধীরে সম্পর্কের দিকে গড়াতে থাকে। একসময় সম্পর্ক হয়েও যায়। ফোনে সবসময় কথা চলতো আর সারাক্ষণ চ্যাটিং হতো। মিশু ধীরেধীরে দূর্বল হতে থাকে তন্ময়ের প্রতি৷ তন্ময় ছোটবেলা থেকেই শহরে বড় হয়েছে। টাকাওয়ালা বাপের একমাত্র ছেলে হওয়ায় যার চলার ধরণটাই ছিলো অন্যরকম। মিশুকে বারবার দেখা করার জন্য চাপ দিলেও মিশু দেখা করতে রাজি হতোনা। দূরত্বের ব্যবধান আর গ্রামে বড় হওয়ায় মিশুর মাঝে ভয়টা কাজ করতো বেশি৷ তবুও প্রেমের টানে বাবা মাকে মিথ্যে বলে ঢাকায় ছুটে এসেছিলো তন্ময়ের ডাকে৷ কিন্তু দেখা হওয়ার পর এত বড় ধাক্কা খেতে হবে সেটা কল্পনাও করতে পারেনি সে।

প্রথম দেখেই মুখটা বিকৃত করে চোখ কপালে তুলে ফেলেছিলো তন্ময়। আংশিক ভ্রু কুঁচকে যখন মিশুর দিকে তাকালো, মিশু খেয়াল করে দেখলো তন্ময়ের চোখেমুখে মুগ্ধতার পরিবর্তে বিতৃঞ্চা। তখনই ভয়ে বুকটা কেঁপে উঠেছিলো মিশুর৷ কিন্তু মুখে কোনো প্রশ্ন করতে পারেনি।

সারাদিন একসাথে ঘোরাফেরা করে, সন্ধ্যার দিকে তন্ময় মিশুকে বাস স্ট্যান্ডে নিয়ে এসে বাসে তুলে দিয়ে বলেছিলো, "সাবধানে যেও। এটাই হয়ত আমাদের শেষ দেখা।'

মিশু অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলে তন্ময় কিছু বলেনি। কিন্তু বাসায় গিয়ে ফোন দিয়ে বলেছে, 'আমার একটা স্ট্যাটাস আছে। আমার ইগো আছে, পারসোনালিটি আছে৷ তোমার মত একেবারে ক্ষ্যাত টাইপের মেয়ের সাথে রিলেশান রাখা আমার পক্ষে পসিবল না৷'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now