76

1.1K 38 0
                                    

৭৬
ঠিক যেন স্বপ্নের মত একটা রাত কাটলো। এতটা প্রশান্তি, ভালোবাসা, স্বপ্নে ঘেরা একটা রাত্রি ছিলো, যা প্রতিটা মানুষের আকাঙ্ক্ষা জুরে থাকে। কিন্তু সকালে নাস্তার টেবিলে বসে বাঁধলো বিপত্তি।

বর্ষা আহমেদ বললেন, 'মিশু আজ আমার সাথে হাইকমিশনার অফিসে সাক্ষাতের জন্য যাবে। তোমাকে কোন ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন দেয় দেখো।'

চমকে উঠলো সবাই। মেঘালয় মিশু'র দিকে একবার তাকিয়ে বললো, 'মানে! মিশু যখন বাইরে যাবেই না তাহলে ভাইভায় যেতে হবে কেন?'

মা বললেন, 'বাইরে না যাওয়ার কথা তুলছো কেন? স্কলারশিপ পেয়েছে, অবশ্যই যাবে। আমার ঘরে প্রতিটা ছেলে মেয়ের নিজস্ব ইচ্ছেনুযায়ী ক্যারিয়ার বেছে নেয়ার স্বাধীনতা আছে।'

মেঘালয় ও মিশু একে অপরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো। মেঘ বললো, 'কিন্তু মিশুর এই স্কলারশিপ নেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না।'

মা বললেন, 'তুমি যা মনে করছো তোমার স্ত্রী'র সেটা নাও মনে হতে পারে। অনেকের স্বপ্ন থাকে বিদেশে আন্ডারগ্রাড করার। একটা সুযোগ পেয়েছে, সেটাকে ফেলে দিতে হবে কেন? ভালো ভার্সিটি হলে গবেষণার একটা ভালো সুযোগ পাবে। বিভিন্ন দেশের বন্ধুবান্ধব হবে, বাইরের দেশের ডরমিটরিতে থাকার এক্সপেরিয়েন্স হবে, আরো অনেক দেশ ঘুরে দেখার সুযোগ পাবে।'

কেউ কোনো কথা বললো না। আকাশ আহমেদ মাথা নিচু করে গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করছেন। এদিকে কারো মুখে কোনো কথা নেই দেখে কিছুক্ষণপর উনি বললেন, 'আমরা সবকিছুর আগে মিশু'র ইচ্ছেটা শুনি। ওর এমবিশন কি? আর ও ঠিক কোথায় পড়াশোনা করতে চাচ্ছে?'

মিশু গম্ভীর হয়ে গেলো। সবসময় তো ভেবে এসেছে জীবনে বড় হতে হবে। কিন্তু সঠিক কোনো লক্ষ্য কখনো স্থির করা হয়েছিলো কি? লক্ষ্য থাকলেও সে অনুযায়ী কাজ করা হয়নি। ছোটবেলায় সবারই স্বপ্ন থাকে ডাক্তার হওয়ার। স্যার যাকেই জিজ্ঞেস করবেন, বড় হয়ে কি হতে চাও? একবাক্যে বলবে ডাক্তার। কিন্তু আস্তে আস্তে বড় হওয়ার সাথে সাথে স্বপ্ন বদলায়, জীবনের লক্ষ্য বদলায়। ছোটবেলায় যেটা ড্রিম ছিলো, বড় হওয়ার সাথে সাথে সেটা শুধুমাত্র কল্পনা হয়ে দূরে সরে যায়। এখন কি লক্ষ্য আছে সেটা নিজেই জানেনা মিশু।

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now