68

1.1K 35 1
                                    

৬৮

স্নানের পর মিশুর চেহারায় একটা অনবদ্য স্নিগ্ধতা এসে ভর করে। ভেজা চুল গুলো চিবুকের পাশে দুলছে। মেঘালয় ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বললো, 'চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবন্তীর কারুকার্য... '
মিশু আড়চোখে তাকিয়ে বললো, 'তারপর?'
- 'অতিদূর সমুদ্রের পর, হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা;
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে, যমুনা ব্রিজে ট্রাকের উপর..
বলেছিলাম আমি, এতদিন কোথায় ছিলেন?
রংপুরের বনলতা সেন?'

মিশু হাসিতে গড়িয়ে পড়ে বললো, 'গল্পটা কিন্তু সেখানেই শুরু হয়েছিলো। আমি যদি ছেলেমানুষি করে সেদিন জোৎস্না দেখতে না চাইতাম তাহলে কিন্তু আজকের দিনটা আসতো না।'
- 'হুম। মাঝেমাঝে কিছু ভূল জীবনটাকে কিছু প্রাপ্তি ই দেয়। তাইনা?'
মিশু কিছু বলতে যাবে এমন সময় শ্বাশুরি মা এসে দরজায় দাঁড়ালেন। পর্দার ওপাশ থেকে বললেন, 'আসবো মেঘ?'
মেঘালয় শোয়া অবস্থা থেকে উঠে বসতে বসতে বললো, 'হ্যা আম্মু আসো।'
মা ভেতরে এসে বিছানায় মেঘালয়ের পাশে বসলেন। তারপর কপালে সুক্ষ্ম ভাঁজ ফেলে বললেন, 'দাঁড়ি বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে। ছোট করে ফেলিস। আর তোর মামারা কালকে চলে আসবে। তোর নানুবাড়ির সবাই কালকেই এসে যাবে। অলরেডি সবার বাসায় কার্ড পৌঁছে গেছে। দুদিনের মধ্যেই দেখবি বাড়ি লোকজনে গিজগিজ করছে।'
মেঘালয় বললো, 'হুম। একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা। আজকে ফটোগ্রাফার আসার কথা ছিলো। এসেছিলো?'
- 'না। শোন, মিশুকে তো রংপুরে চলে যেতে হবে। মেহমানরা এসে পাত্রীকে এখানেই দেখে সারপ্রাইজ নষ্ট হয়ে যাক সেটা চাচ্ছি না। আমরা গাড়ি নিয়ে গিয়ে আয়োজন করে ওকে নিয়ে আসবো। আজকে শপিং শেষ হলে সকালে ওকে পাঠিয়ে দিই?'

মেঘালয় মিশু'র দিকে তাকালো। বুকের ভেতরটা ছ্যাঁত করে উঠেছে ওর। গতবার মিশু বাসায় চলে যাওয়ার পর তন্ময় গিয়ে হাজির হয়েছিলো। এবার যেন কোনো ঝামেলা না হয়।

মিশু হঠাৎ বলে উঠলো, 'আমি হাইকমিশনার অফিস থেকে মিট করে আসি? তারপর বাড়ি যাই?'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now