50

1.1K 43 1
                                    

৫০

গোসলের পর চুল মুছতে মুছতে মিশু রুমে এসে দেখলো মেঘালয় এখনো ঘুমাচ্ছে। সারারাত জার্নি করে এসেছে, একটু ঘুমানো দরকার। মিনিট দুয়েক মেঘালয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকার পর মিশু এগিয়ে এসে বিছানায় বসলো। ঘুমানোর সময় মেঘালয়ের শরীরটা অন্যরকম উষ্ণ হয়ে ওঠে। ওর উষ্ণ গলাটা ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে। মিশু নিচু হয়ে এসে মেঘালয়ের গলায় হাত রাখা মাত্রই টের পেয়ে গেলো মেঘ। ও জেগেই ছিলো। তবুও চোখ মেললো না। চুপটি মেরে মিশুর স্পর্শকে অনুভব করার চেষ্টা করলো। মিশু গলায় হাত রেখে আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে নিচু হয়ে এসে মেঘের কপালে ঠোঁট স্পর্শ করালো। এমন সময় মেঘালয় দুহাতে জাপটে ধরলো ওকে। মিশু মুখটা তুলে মেঘালয়ের মুখের উপর উপুড় হয়ে এলো। দুপাশের ভেজা চুল মেঘালয়ের গলার উপর হেলে পড়েছে। মেঘালয় বললো, 'তোমাকে কোন ড্রেসে সবচেয়ে সুন্দর লাগে জানো?'

- 'না। কিসে?'

- 'শাড়িতে। শাড়ি পড়বা?'

- 'নতুন শাড়ি কিনতে হবে।'

- 'আজকে শপিংয়ে নিয়ে যাবো। নতুন কয়েকটা ড্রেসও কিনতে হবে তোমার। তোমাকে যে ড্রেসে সবচেয়ে বেশি মানায় সেগুলো নিয়ে দিবো।'

- 'আচ্ছা। আমিতো জানতাম আমাকে সব ড্রেসেই মানায়।'

- 'উহু। গায়ের রংয়ের সাথে ড্রেসে শুট করার একটা ব্যাপার থাকে। আর হাইট ও ওয়েট অনুযায়ী কোন জামাটা পড়লে বেশি সুন্দর লাগবে সেটাই পড়া উচিৎ তাইনা?'

- 'উম। আচ্ছা আপনি এতকিছু জানেন কি করে?'

- 'জানতে হয় রে পাগলী। সাধে কি মেয়েরা তোমার বরের জন্য পাগল হয়?'

- 'ইইইই খুব খারাপ। ছাড়ুন আমাকে।'

মেঘালয় একহাতে মিশুর চুলগুলো ঠিক করে দিতে দিতে বললো, 'সবসময় যে স্টাইলে চুল বাঁধো, মাঝেমাঝে একটু ভিন্নতা আনাও যায়। এতে একটা আলাদা লুক চলে আসবে।'

- 'উফফ আপনি ফ্যাশন ডিজাইনার হলেন না কেন বলুন তো?'

- 'বউয়ের ফ্যাশন ডিজাইনার হবো বলে।'

- 'হয়েছে। এবার ছাড়ুন, আর উঠে ফ্রেশ হয়ে আসুন দ্রুত।'

মেঘালয় মিশুকে আরো জোরে বুকের সাথে চেপে ধরে বললো, 'ছাড়বো না। আজকে সারাদিন শুয়ে থাকবো।'

কথাটা বলেই মিশুকে টেনে বিছানায় তুলে নিলো। কম্বলের ভিতরে টেনে নিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে রইলো। মিশু এই মানুষটার সাথে পারেনা কিছুতেই। শক্ত হাত দুটো দিয়ে মিশুকে এমনভাবে ধরে রইলো যে মিশুর নড়াচড়া করার ও শক্তি রইলো না। খুনসুটি চলতে লাগলো দুজনাতে।

সারাটা দিন শপিং, খাওয়াদাওয়া,দুষ্টুমি আর ঘুরাঘুরি করেই কাটলো। রাত্রিবেলা হঠাৎ খবর এলো তন্ময়কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। যে ছেলেটা মিশুর উপর আক্রমণ করেছিলো তাকে মারতে মারতে মরার মত অবস্থা করে ফেলেছে তন্ময়। আর সেলিমকেও প্রচুর মেরেছে। দুজনের অবস্থা আশংকাজনক। কথাটা শুনেই বুকটা কেমন করে উঠলো মিশুর। তন্ময়কে ছাড়ানোর জন্য ওকেই যেতে হবে। কারণ ওর যে এখন কেউই নেই। আর মিশুকেও সাক্ষী দিতে হবে সত্য ঘটনার। তবে ওদের এই করুণ অবস্থা করার কারণে মেঘালয় তন্ময়ের প্রতি অনেকটা সন্তুষ্ট। বারবার বলছিলো, 'এতদিনে কাজের কাজ করেছে ছেলেটা। এরকম প্রেমিকই তো দরকার।

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now