82

1K 34 1
                                    

৮২
সকালে নাস্তা সেরে মেঘালয় অফিসে চলে গেলো। ব্যবসায়ের ঝামেলা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত দেখাচ্ছে ওকে। মিশু আগ বাড়িয়ে আর ভিসার কথা তোলে নি। কিন্তু ওর মনে একটা বিষয় খুঁতখুঁত করেই যাচ্ছে। দোটানায় পড়ে গেলে যা হয়। রাত্রিবেলা বিষয়টাকে এড়িয়ে গেলেও সকাল থেকে মনে দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছে। একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো দরকার। এভাবে দোটানা নিয়ে না নিজে ভালো থাকা যায়, না কারো সাথে ভালোভাবে কথা বলা যায়।

দুপুরে মেঘালয় বাসায় ফিরে সবার সাথে বসে খাবার খেলো। তারপর মিশুকে ডাকলো কথা বলার জন্য। মিশু থালাবাসন পরিষ্কার করে রেখে হাত ধুয়ে রুমে আসতে দেরি করে ফেললো। মেঘালয় চোখ পাকিয়ে বললো, 'ডাকার সাথে সাথে আসা যায় না?'
- 'থালাবাসন মাজছিলাম।'
- 'থালাবাসন মাজার জন্য কাজের লোক আছে না?'
- 'আমার তো এ বাড়িতে কোনো কাজ নেই। সারাক্ষণ শুয়ে বসে থাকতে আমার ভালো লাগে না। ছোটবেলা থেকেই বাসার টুকিটাকি কাজগুলো করার অভ্যাস আমার।'
- 'বসো, সিরিয়াস হয়ে দুটো কথা বলবো। তুমিও সিরিয়াস ভাবে নিও।'
- 'আজ পর্যন্ত আপনার কোনো কথা আমি ফাজলামির ছলে নিয়েছি?'
- 'নাও নি। কিন্তু এখন যেটা বলবো সেটা শোনার জন্য তোমার মানসিক প্রস্তুতি দরকার।'

মিশু সোফায় বসতে বসতে ওড়নায় হাত মুছলো। তারপর একটা নিশ্বাস ফেলে মেঘালয়ের দিকে তাকিয়ে বললো, 'বলুন কি কথা?'
- 'ওড়নায় হাত মুছলে কেন? বাসায় কোনো ন্যাপকিন নেই? টিস্যু নেই?'
- 'আজকে এরকম ক্যাটকেটে গলায় কথা বলছেন কেন? আপনার কথা শুনবো সে কারণে তাড়াহুড়ো করে ওড়নায় হাত মুছলাম।'
- 'এতক্ষণ ধৈর্য ধরে বসে থাকলাম আর দু মিনিট থাকতে পারতাম না?'

মেঘালয়ের গলায় রাগ স্পষ্ট। মিশুরও মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। ও নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, 'আমি হাত মুছতে গেলে আপনি আরো রেগে যেতেন। তর্ক ছেড়ে দিয়ে এখন বলুন কি কথা?'
- 'কথা বলার মুডটাই নষ্ট করে দিয়ে এখন বলছে বলুন কি কথা?'

মিশুর কপালে সুক্ষ্ম ভাঁজ পড়ল। মেঘালয়ের আচরণ অন্যরকম লাগছে। সামান্য দেরি করার কারণে এত রেগে যাওয়ার কি মানে হয়?
মিশু প্রশ্নটা করতেই মেঘালয় বললো, 'দেরি করে এসে একটা অন্যায় করেছো। এখন আবার প্রশ্ন করছো??'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now