16

1.2K 44 0
                                    

১৬.

চোখ মেলে দেখলো মেঘালয় বিছানার পাশে বসে আছে। মিশু কয়েকবার চোখ পিটপিট করে কিছু বলার জন্য মুখ খুলেছে এমন সময় মেঘালয় একটা থার্মোমিটার মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দিলো। মিশু একেবারে হতভম্ব!

মেঘালয় জ্বর মেপে বললো, 'শরীর অনেক খারাপ করেছে তোমার। চুপচাপ শুয়ে থাকো। বাবা ওষুধ আনতে গেছে, পেট ভরে ভাত খেয়ে ওষুধ খাবে।'

মিশু বেশ চমকালো। মেঘালয় কত সহজভাবে কথা বলছে যেন দুজনের সম্মতিতেই বিয়েটা হয়েছে। কোনো সংকোচ নেই, কোনো চিন্তার রেখা নেই চেহারায়। কত সহজ, সাবলীল!

মেঘালয় একটু নিচু হয়ে বললো, 'ব্লাড কি খুব বেশি আসছে?'

মিশু তীক্ষ্ণ চোখে তাকালো। কি নির্লজ্জ লোকটা! এমনভাবে কথা বলার কি আছে? যেন মিশু ওর অনেক বছরের বউ। মিশুর গা জ্বালা করছে রীতিমত। অন্যদিকে অবাক ও লাগছে।

মেঘালয় বললো, 'তুমি নাকি অনেক বড় হবে? বড় হওয়ার জন্য আগে তো সুস্থ থাকাটা জরুরি। যদি চিন্তাই করতে না পারো, তাহলে সামনে এগোবে কি করে?'

- 'আপনি খুব উল্লাসী মুডে আছেন মনেহচ্ছে?'

- 'আমিতো সবসময় ই এমন।'

- 'বাসার জন্য মোটেও চিন্তা হচ্ছেনা? এত বড় একটা দূর্ঘটনার জন্য খারাপ ও লাগছে না?'

মেঘালয় হেসে বললো, 'খারাপ লাগলেও সেটা কেউ বুঝতে পারেনা। আর যত বাজে পরিস্থিতি ই তৈরি হোকনা কেন, আমার মনের শান্তি কোনোভাবেই নষ্ট করতে পারেনা।'

- 'তাই নাকি?'

- 'হ্যা। মানসিক অবস্থাকে এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছি, যেখানে দুঃখ কষ্ট পৌঁছাতে পারেনা। দুশ্চিন্তা কখনোই আমাকে কাবু করতে পারেনা।'

মিশু মুগ্ধ স্বরে বললো, 'আপনি সত্যিই অন্যরকম একজন মানুষ। আমার ও ইচ্ছে করে আপনার মত হতে।'

- 'সেজন্যই তো সবসময় আমার সাথে সাথে থাকা উচিৎ। যাতে আমার মত হতে পারো।'

মিশু মুখটা বিকৃত করে বললো, 'কোনো প্রয়োজন নেই। আমি আপনার সাথে যাবো না।'

- 'ওকে ফাইন। যেওনা। কিন্তু ডিভোর্স দিয়ে দেয়ার পর আমার মত হয়েও বা তোমার লাভ কি?'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now