22

1.2K 46 3
                                    

আরাফের সামনে এসে মৌনি সরাসরি বললো, 'মিশুকে ভাইয়া বিয়ে করেছে।'

আরাফ যেন আকাশ থেকে পড়লো। হা হয়ে একবার মৌনির দিকে আরেকবার মিশুর দিকে তাকাতে লাগলো৷ মৌনি বললো, 'পরে শুনিও সবকিছু। এখন নাস্তা করে নেই আসো।'

নাস্তার টেবিলে বসে সবার সাথে মৌনির আচরণ দেখে কেউ মুগ্ধ না হয়ে পারলো না। মৌনি নিজের বাবা মায়ের মত মিশুর বাবা মায়ের সাথে আচরণ করছে। এমনকি খাবার তুলেও খাওয়াচ্ছে মিশুর মাকে৷ সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছে মিশুর বাবা৷ এরকম পরিবারে মেয়েটা যাচ্ছে ভেবে সত্যিই ভালো লাগছে। মৌনির মাঝে কোনো কৃত্তিমতা নেই৷ কত সহজেই আপন করে নিয়েছে যেন হাজার বছরের আপনজন।

মৌনির আচরণে মুগ্ধ সকলেই। মৌনি যখন বসার ঘরে মিশুর বাবা মায়ের সাথে কথা বলছিলো মিশু তখন রুমে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছিলো। মৌনি কি পরিমাণ স্মার্ট একটা মেয়ে, ভাবলেই বুকটা কেমন যেন করে। ইচ্ছে করে মৌনির মত হয়ে যাই। যেমনি চলার ভংগী, তেমনি কথা বলার স্টাইল। গলার স্বর আর প্রত্যেকটা উচ্চারণে অন্যরকম মাধুর্যতা ফুটে ওঠে। একবার শুনলেই ইচ্ছে হয় আরো শুনি, এমন স্মার্ট কেন মেয়েটা?

মিশু যখন আনমনা হয়ে এসব ভাবছিলো, পেছন থেকে মেঘালয় জড়িয়ে ধরলো ওকে। চমকে উঠে আয়নায় তাকালো মিশু। আয়নায় দেখতে পাচ্ছে মেঘালয় ওর কাঁধের উপর মাথাটা রেখে আয়নার দিকেই তাকিয়ে ওকে দেখছে। মেঘালয় ভ্রু দুটো নাচালো। মিশু বললো, 'কি?'

- 'একটা জিনিস খুব মজার সেটা খেয়াল করেছো?'

- 'কি জিনিস?'

- 'খাটো মেয়েকে বিয়ে করলে একটা মজা আছে।'

- 'কিরকম?'

মেঘালয় মিশুকে আচমকা একবার ঘুরিয়ে সামনা সামনি দাড় করিয়ে নিলো। তারপর বুকে জড়িয়ে ধরে বললো, 'জড়িয়ে ধরলে মাথাটা বুকে এসে ঠেকে যায়।'

- 'কিহ!'

লজ্জায় কথাই বলতে পারলো না মিশু। মেঘালয়ের বুকে মাথা রেখে দুহাতে জাপটে ধরার চেষ্টা করলো। মেঘালয় বললো, 'লম্বা মেয়েকে বিয়ে করলে সমানে সমান হয়ে যেতাম। জড়িয়ে ধরলে ওর কাঁধে মাথা রাখতে হবে নয়ত মাথাটা রাখতে পারবো না শান্তিমত। অথচ তোমার মাথাটা আমার বুকে এসে ঠেকে যাচ্ছে, আমার শান্তি লাগছে বুকে চেপে ধরতে। আর তোমার ও শান্তি লাগছে আমার বুক বরাবর মাথা রাখতে পেরে।'

হৃদমোহিনী ( সম্পূর্ণ)Where stories live. Discover now